বর্ষা এলেই বেহাল হয় রায়পুর পৌরসভার সড়কগুলো, ঘটে দুর্ঘটনা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় গত ৩০ বছরেও ড্রেনেজ-ব্যবস্থা হয়নি। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। একাধিকবার ডুবে যায় সড়কগুলো। কিন্তু পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই দৃশ্যমান হয় সড়কের ক্ষতবিক্ষত চেহারা। ফেটে চৌচির হয়ে যায়।

নষ্ট হয়ে যায় বিটুমিন। সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত। প্রকাশ পায় সড়কের এক ভয়াবহ বেহাল চিত্র। এমন সড়ক দিয়ে কেবল ছোট যানবাহন নয়, বড় গাড়িকেও চলতে হয় হেলিয়ে-দুলিয়ে। ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। হয় প্রাণহানি। রায়পুর পৌরসভার পক্ষ থেকে সড়কগুলো মেরামত করে থাকে। গত বর্ষা মৌসুমে টানা শহরের ৪০ কিলোমিটারের প্রায় ২০টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৈরি হয় ছোট-বড় গর্তের। সড়কগুলো সংস্কারে গত ১০ বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। 

অভিযোগ আছে, পৌরসভার সড়কগুলো নির্মাণ-সংস্কারকাজ টেকসই হয় না, ঠিক থাকে না কাজের মান, ব্যবহার করা হয় নিম্নমানের উপকরণ। ফলে প্রতিবছর বর্ষায় বৃষ্টি হলেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এ কারণে পৌরসভার বড় অঙ্কের অর্থ অপচয় হয়।

শহরের চলাচলকারী অটোচালক ইব্রাহিম বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে পৌরসভার সড়কগুলোর বেহাল দশা। গত শুক্রবার সকালে নতুনবাজার-খাজুরতলা নামক স্থানে অটো উল্টে মারাত্মক আহত হয়েছেন শিশুসহ এক নারী যাত্রী। এভাবেই প্রায় দিন অটো উল্টে যাত্রীরা আহত হন।’

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষায় প্রতিবছরই রায়পুর পৌরসভার সড়কগুলো জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়। তা ছাড়া পানিতে ডুবলে বিটুমিন দ্রুত ওঠে যায়। তাই সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তবে পৌরসভা নিয়মিতই তদারকির মাধ্যমে সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারকাজ করে থাকে। কাজের ব্যাপারে কোনও ছাড় দেওয়া হয় না। এখন সংস্কারকাজ চলছে। আশা করি, কাজ শেষ হলে সড়কগুলো আগের মতো হয়ে যাবে।’

সরেজমিন দেখা যায়, সম্প্রতি বন্যা ও ২০ দিনের টানা বর্ষণের ফলে অনেক সড়ক এখনও ক্ষতবিক্ষত। রায়পুর-ফরিদগঞ্জ, হায়দরগঞ্জ সড়কের ট্রাফিক মোড় থেকে খাজুরতলা সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, টিএনটি সড়ক, গাজীনগর সড়ক, রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ সড়ক, টিসি সড়ক, মীরগঞ্জ সড়ক, কাপিলাতুলি সড়কসহ পৌরসভার ১৪টি এলাকার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সড়ক দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরিগুলোকে হেলেদুলে চলতে হচ্ছে।

রায়পুর পৌরসভার প্রশাসক (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) পদ্ম সেন সিংহ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বন্যা ও টানা বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সাময়িক না করে স্থায়ীভাবে নির্বাহী প্রকৌশলী সহযোগিতায় প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করবো।’