পূজামণ্ডপে ইসলামি গান, গ্রেফতার ২ জনের রিমান্ড শুনানিতে হট্টগোল

চট্টগ্রাম নগরের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের মঞ্চে ইসলামি গান গেয়ে গ্রেফতার দুই শিল্পীর রিমান্ড শুনানিতে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে চরম হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিব্রত হয়ে একপর্যায়ে এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। সোমবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পূজামণ্ডপে ইসলামি গান পরিবেশনের অভিযোগে গ্রেফতার দুই জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল। আজ আদালতে রিমান্ড শুনানির ধার্য তারিখ ছিল। অপরদিকে এ মামলায় আসামিদের জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। রিমান্ড এবং জামিনের পক্ষে-বিপক্ষে আইনজীবীরা তুমুল হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন। এতে বিব্রত বিচারক একপর্যায়ে রিমান্ড আবেদন বাতিলের আদেশ দিয়ে এজলাস থেকে নেমে যান। আসামিদের জামিন শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য রাখা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নগরের আন্দরকিল্লার জেএম সেন হলে পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ছয় সদস্য ইসলামি সংগীত পরিবেশন করার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে সংগঠনটি ওই পূজামণ্ডপে সংগীত পরিবেশন করতে যায়।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) নগরের কোতোয়ালি থানায় মহানগর পূজা কমিটির অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) সজল দত্ত, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম, নুরুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা, মামুনসহ সাত জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরের পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গান পরিবেশনকারী দুই জনকে গ্রেফতার করে। তারা হলো- চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম ও নুরুল ইসলাম। দুজনই মাদ্রাসার শিক্ষক। পরে তাদেরকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম বলেন, আসামিরা পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। মঞ্চে ওঠার আগে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। তারা জোর করে গান গেয়েছেন, তা নয়। এ কারণে আজ আদালতে তাদের জামিন চাওয়া হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সুজন দাসসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড শুনানিতে অংশ নিয়ে তারা আদালতে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের দাবি জানান। তারা বলেন, আসামিরা যে গান করেছেন, তাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।