কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় চার জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার বাঙ্গড্ডা বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
নিহত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নাম মো. সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৫০)। তিনি হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও দায়েমছাতী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকাল ৩টায় বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। একই সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠান শেষে পেরিয়া ইউনিয়নে আরেক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। আব্দুল গফুরের সমর্থকরা গাড়িবহর নিয়ে বাঙ্গড্ডা বাজার অতিক্রম করছিলেন। এ সময় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা পেছন থেকে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন গফুর ভূঁইয়ার অনুসারীরা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সেইসঙ্গে পাঁচ জন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি আমার অনুসারীদের নিয়ে রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান করেছি। অনুষ্ঠান শেষে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলায় পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভায় আসার পথে বাঙ্গড্ডা বাজারে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা আমাদের গাড়িবহরে হামলা চালান। এতে চার জন আহত এবং সেলিম ভূঁইয়া নিহত হন। সেলিম ভূঁইয়া আমার কর্মী ছিলেন। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
নিহতের ভাই আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার ভাই সেলিম দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার অনুসারী ছিলেন। গফুর ভূঁইয়ার সভায় যাওয়ার পথে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার লোকজন তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যা করেছেন। আমি ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। বিএনপি হয়ে বিএনপির নেতাকে হত্যা করলো, কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আমি এর জবাব চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার প্রোগ্রাম ছিল বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নে। শান্তিপূর্ণভাবে আমি ওই প্রোগ্রাম শেষ করে সেখান থেকে চলে এসেছি। আমার প্রোগ্রামে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। পরে কী হয়েছে, তা আমি জানি না।’
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’