বিশ্ব শরণার্থী দিবস

আটকে আছে প্রত্যাবাসন, থামেনি রোহিঙ্গা স্রোত

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফে পালিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলম। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পটিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় তার পরিবারের। তিনি এখন এই ক্যাম্পের নেতা। শরণার্থী হিসেবে তার পরিবার বিনামূল্যে চাল-ডাল, তেল, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পায়। ছোট্ট একটি ঘরে ইতিমধ্যে কাটিয়ে দিয়েছেন টানা প্রায় আট বছর। কিন্তু দুশ্চিন্তা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। আশার কোনও আলো দেখছেন না। কারণ জন্মভূমিতে ফেরার কোনও লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন না। তার মতো একই অবস্থা বাংলাদেশে আশ্রিত ১২ লাখ রোহিঙ্গার।

দুঃখ ও হতাশার কথা জানিয়ে মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে রাজি। নাগরিকত্বসহ কয়েকটি দাবি পূরণ না হওয়ায় রোহিঙ্গারা ঠিকানাবিহীন জাতিতে পরিণত হচ্ছে। আর মিয়ানমারও প্রত্যাবাসন শুরু করছে না। বাংলাদেশ চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের অনীহার কারণে এ পর্যন্ত একজনকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। উল্টো এখনও আরাকান আর্মির অত্যাচারে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের মানবিক আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এভাবে আমরা কত বছর এখানে থাকবো। যেকোনো প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসন শুরু করা প্রয়োজন।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যের জন্মভিটা ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে আট লাখ এসেছেন ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। বাকিরা আগে এবং পরে এসেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসকে ঘিরে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। অবশ্য দিবস নিয়ে রোহিঙ্গাদের কর্মসূচি নেই।

গত মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উখিয়ায় শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন। আন্তোনিও গুতেরেসের পাশে বসে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছি আমরা।’

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ

রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে আরাকান আর্মি

রোহিঙ্গা নাগরিক ও ক্যাম্পের নেতারা বলছেন, প্রত্যাবাসন শুরু তো দূরের কথা উল্টো মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। গত প্রায় আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো যায়নি। এর মধ্যে নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৯ হাজারের বেশি। যারা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ঢুকেছেন। তারা নতুন রোহিঙ্গা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। এখনও আসার স্রোত থামেনি। ভারত থেকেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তারাও কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এতে দিনকে দিন চাপ বাড়ছে বাংলাদেশের ওপর। এত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে কোথায় আশ্রয় দেবে বাংলাদেশ। 

এখনও আসছেন রোহিঙ্গারা

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাখাইনের বুচিডংয়ের শ্যালাপ্রাং গ্রাম থেকে পালিয়ে নৌকায় করে নাফ নদ দিয়ে টেকনাফের নাইট্যংপাড়া সীমান্ত দিয়ে ঢুকে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নুর জাহান (৪৫)। একই নৌকায় তার সঙ্গে আরও ২৫ জন রোহিঙ্গা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নুর জাহানের সঙ্গে কথা হয়। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘রাখাইনে আরাকান আর্মি আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন করছে। যাদের কাছে টাকা আছে, তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সীমান্ত পার করে দিচ্ছে। আরাকান আর্মি বলছে, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ভারত সীমান্ত খোলা। যে দেশে ইচ্ছে তোমরা চলে যাও। এখানে জায়গার মালিকানা দাবি করতে পারবে না। বাংলাদেশে যেতে চাইলে ১৩ লাখ কিয়াট দিতে হবে। অন্য দেশে যেতে চাইলে ১৫-২০ লাখ কিয়াট। পরে ১২ লাখ কিয়াট (যা বাংলাদেশি ৩৫ হাজার টাকা) দিলে নৌকায় করে বাংলাদেশ সীমান্তে নামিয়ে দিয়ে যায়। তবে আমাদের পাঠিয়ে দিলেও যুবক ছেলেদের জোরপূর্বক রেখে দিচ্ছে। অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করছে। আমার মতো আরও অনেকে টাকা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। যাদের বেশিরভাগই বয়স্ক পুরুষ ও নারী-শিশু।’

মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে

সম্প্রতি রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা তরুণ মো. সেলিম বলেন, ‘আরাকান আর্মি আমাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চেয়েছিল। মুক্তিপণ দেওয়ায় ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন পর আবার ধরে নিয়ে যায়। ১৭ দিন আটকে রেখে আমাকে অস্ত্রসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়। এর মধ্যে যারা প্রশিক্ষণ নিতে ও যুদ্ধে যেতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের নির্যাতন করা হয়। ১৭ দিন পর সুযোগ বুঝে আমি পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসি।’ 

ভারত থেকে এসেও ক্যাম্পে আশ্রয়

সম্প্রতি ভারতের কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে টেকনাফের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা। এদের একজন করিম উল্লাহ। লেদা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এই ব্যক্তি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৯ জুন আমরা ৫০ জন ভারতের কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে টেকনাফের ক্যাম্পে স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছি। আমি এক বছর জেল খেটেছি। ভারতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) কার্ড ছিল আমাদের। আমার মতো অনেক রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশে জোর করে পাঠিয়ে দিচ্ছে ভারত।’  

লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘গত ও চলতি সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কিছু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার খবর শুনেছি। এ ছাড়া ভারত থেকে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা এখানে স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তবে ঠিক তাদের সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

আরাকান আর্মির দখলে রাখাইন, প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা

মোহাম্মদ আলম বলেন, রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি মোটেও ভালো না। আরাকান আর্মি সেখানকার সরকারি বাহিনীকে উৎখাত করে অধিকাংশ এলাকা দখলে নিয়েছে। মংডুর দক্ষিণ-পূর্ব দিকের রাচিডং-বুচিডং শহরটিও দখলে নিয়েছে। সেখানকার অন্তত দুই লাখ রোহিঙ্গা এখন বাস্তুহারা। মংডু টাউনও তাদের দখলে। সব মিলিয়ে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত। আর বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার দেশে ফেরার ইচ্ছা-দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। 

গত প্রায় আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো যায়নি

বাংলাদেশে তিন যুগ পার

উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পে ৩৮ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই ১৯৯১ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুুদির দোকানে বসে গল্প করছিলেন নুর মোহাম্মদ (৭৯) ও দিল মোহাম্মদ (৭৫)। তারা দুই বন্ধু। একসঙ্গে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বর্তমানে ৩৪ বছর পার করেছেন।

নুর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এভাবে আর কত বছর এদেশে থাকতে হবে, তা জানা নেই। মৃত্যুর দুয়ারে এসে গেছি। হয়তো এখানে মৃত্যু হবে। অন্তত আমাদের সন্তানরা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, সেই আশায় দিন পার করছি। কিন্তু কখন ফিরবে, তা জানি না। এর মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গারা আসছে। গত কয়েক বছরে একজনও ফেরত পাঠানো যায়নি। আমরা এখন শরণার্থীর জীবন পার করছি। যার কোনও ভবিষ্যত নেই।’

প্রত্যাবাসন কবে শুরু  

২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর একটি সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তিতে দুই মাসের মাথায় প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। এর মধ্যে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তিন দফায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে গেছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল তারা। কিন্তু মিয়ানমার আগ্রহী না হওয়ায় এখনও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন। সর্বশেষ ১৯৯২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ।   

প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে প্রশ্ন রেখে কুতুপালং ক্যাম্পের নুর হালিম বলেন, ‘শরণার্থী জীবন আর ভালো লাগে না। এদেশে থাকতে চাই না। নাগরিকত্ব ও জীবনের নিরাপত্তা পেলে নিজ দেশে ফিরে যাবো।’ 

প্রত্যাবাসন ছাড়া কোনও পথ নেই

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত প্রায় আট বছরেও একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমার ফেরত নেয়নি। তার ওপর এখনও আসছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। রোহিঙ্গাদের অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজারের মানুষজন নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছেন। প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান ছাড়া আর কোনও পথ নেই।’

নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুুদির দোকানে বসে গল্প করছিলেন নুর মোহাম্মদ ও দিল মোহাম্মদ

একই কথা বলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও মিয়ানমারের সিতওয়েতে বাংলাদেশ মিশনের সাবেক প্রধান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এখন জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে আরাকান আর্মি। এটি দেখে মনে হয় রাখাইনের অবস্থা দিন দিন জটিল হচ্ছে। এখানে ক্যাম্পে যারা আছে, তারা এসব শুনে হতাশ হচ্ছেন। সরকারের উচিত প্রত্যাবাসন নিয়ে দ্রুত কাজ করা।’

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই-সংঘাত প্রত্যাবাসন পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে সেখানকার বেশ কিছু অঞ্চল আরাকান আর্মি দখল করেছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসন শুরু করা যাচ্ছে না। প্রত্যাবাসন কার্যক্রম থেমে নেই।’

তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সীমান্তে সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানালেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে অনেক অনুপ্রবেশকারীকে ঠেকিয়েছি। এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। এরপরও কেউ কেউ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গোপনে বাংলাদেশে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা খবর পেলেই তাদের প্রতিহত করছি।’