মুন্সীগঞ্জে হাসপাতালের ভবন নির্মাণকাজ পেছানোয় বিঘ্নিত স্বাস্থসেবা

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবন

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়ায় হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ বিলম্বিত হচ্ছে। এতে, সাধারন মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মূল ভবন নির্মাণ হলেও অন্যান্য কিছু কাজ অবশিষ্ট থাকায় ভবনটি উদ্বোধন করা যাচ্ছে না। এতে ১৫০ শয্যার সক্ষমতা সম্পন্ন নতুন ভবনটি সাধারণ মানুষের কোনও কাজে আসছে না। কারণ, ভবন উদ্বোধন না হলে নতুন ১৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা যাচ্ছে না। তবে, সিভিল সার্জন জানিয়েছেন সরকারের কাছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক আছে। নতুন ভবন হস্তান্তরের পরপরই জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় বছর খানেক আগে। কিন্তু, আনুষঙ্গিক আরও কিছু কাজ অবশিষ্ট থাকায় এটি হস্তান্তর পেছান হয়েছে। গত জুলাই মাসে হস্তান্তরের কথা থাকলেও এখন বলা হচ্ছে ভবনটি আগামী জানুয়ারি মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এটি হস্তান্তর করা হবে। সংস্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ, রান্নাঘর, পানির পাম্প ও পাওয়ার স্টেশন স্থাপনসহ অন্যান্য কিছু কাজ বাকি থাকায়  মূল ভবন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। জাইকার অর্থায়নে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি গত জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ‘বিভিন্ন জটিলতার’ কারণে এটির কাজ পিছিয়ে যায়।

এদিকে, প্রায় ১৫ লাখ জনসংখ্যার এই জেলায় পুরাতন ১০০ শয্যার হাসপাতাল খুব সামান্য প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারছে। তার মধ্যে আবার ১০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও বর্তমানে হাসপাতালের লোকবল অর্থাৎ সক্ষমতা সেই আগের ৫০ শয্যারই রয়ে গেছে। মাত্র ২০-২২ জন ডাক্তার দিয়ে কোনওমতে দৈনিক সহস্রাধিক রোগীদের সেবা দেওয়া হয়। ডাক্তার-রোগীর সংখ্যার আনুপাতিক হার হিসাব করলেই জেলার স্বাস্থ্যসেবার মান সহজেই অনুমান করা যায়। যদিও অন্য পাঁচটি উপজেলায় ৫০ শয্যা করে ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে, আরো রয়েছে পুরো জেলায় ১১১ টি চালু কমিউনিটি ক্লিনিক তবুও এই জেলার রোগীদের অন্যতম ভরসা সদর জেনারেল হাসপাতাল। তাই, জেলার সকল উপজেলা ইউনিয়ন গ্রাম থেকে রোগীরা ছুটে আসেন জেলা সদরের  হাসপাতালে। বিভিন্ন রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বহির্বিভাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ডাক্তার দেখাতে হয়। অতিরিক্ত রোগীর চাপে প্রায় সময়ই ডাক্তার রোগীকে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না। অনেক সময় রোগীদের মেঝেতে বিছানা করে থাকতে হয়। তাই সংস্লিষ্ট সকলের দাবী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন ভবনটি উদ্বোধন করে ব্যবহার উপযোগী করা দরকার।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মুন্সীগঞ্জ গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে জানিয়েছেন আগামী জানুয়ারিতে ভবনটির কাজ সম্পূর্ণ করে হস্তান্তর করা হবে। টেন্ডার দিতে দেরি, টেন্ডার বাতিলসহ অন্যান্য জটিলতায় কাজটি দেরি হয়। তবে দ্রুত কাজটি শেষ করে ভবনটি উদ্বোধন করা জরুরি। এতে মুন্সীগঞ্জবাসী উপকৃত হবে।

এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন জানান, অতি শীঘ্র আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে ভবনটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হবে।

/এইচকে/