গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী তারাকান্দর গ্রামের নটবর রায় (৭৫) জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে ঢাল, সড়কি, ট্যাটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন তারাকান্দর,কান্দি, ধারাবাসইল, শুয়াগ্রাম, ডুমুরিয়া, তালপুকুরিয়া, ভেন্নাবাড়ি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এ কাজে ওই সব গ্রামের মানুষ তারাকান্দর গ্রামে জমায়েত হতেন। এ খবর পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে পৌঁছে দেয় স্থানীয় রাজাকাররা। ৩ মে পাকিস্তানি বাহিনীর নেতৃত্বে রাজাকাররা তারাকান্দর গ্রামে হামলা করে গণহত্যা চালায়। এতে দুশ নারী-পুরুষ শহীদ হন। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা বিভিন্ন মানুষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং মা-বোনদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী তারাকান্দর গ্রামের রাম লাল বায় (৭৯) বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনী চলে গেলে তারাকান্দর গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশগুলো রায়বাড়িতে এনে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাটি চাপা দেই। এ গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে স্মৃতি ফলক নির্মাণের জন্য আমরা সরকারকে জায়গা দেব।’
প্রত্যক্ষদর্শী বিলাসী বাড়ৈ বলেন, ‘নিহতদের লাশ কমলেশ বেদজ্ঞের বাড়ির পাশে ও আমাদের বাড়ির পাশের ডোবায় মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। এ দিন গ্রামের জীবন বাড়ৈ,কালু বাড়ৈকে হত্যা করা হয়। পরে ওই দুই পরিবারের সদস্যসহ আরও ১৭ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।’
বিপুল বাড়ৈ বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশের ডোবা থেকে ছয় বছর আগে মাটি কাটার সময় শহীদদের হাড়, মাথার থুলি বেড়িয়ে আসে। এখানে গণকবরের স্মৃতি ফলক করা হলে আমরা জায়গা ছেড়ে দেব।’
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিলাল হোসেন জানান,গণকবর দুটি সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সেখানে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করে শহীদের তালিকা সংযোজন করা হবে। এছাড়া কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের তথ্য বোর্ডের ৪৬নং কলামে দুটি গণকবরের তথ্য পরিবেশন করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
/বিএল/