হরগঙ্গা কলেজে ফল বিপর্যয়, করণীয় নির্ধারণে ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ

সরকারি হরগঙ্গা কলেজ, ছবি- সংগৃহীতমুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ফল বিপর্যয় হয়েছে। ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, মোট এক হাজার ৩১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ৯১৫ জন। পাসের হার ৬৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৮১ শতাংশ। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে ফল বিপর্যয় ঠেকাতে করণীয় ঠিক করতে ব্যস্থ হয়ে পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মীর মাহফুজুল হক বলেন, ‘ফল পর্যালোচলার জন্য সব শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভা করা হবে। সবার মতামত নিয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। সে কারণেই এ অবস্থা হয়েছে এবার। তাদের মতে, অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি, এক বেঞ্চে পাঁচ জন করে বসার ব্যবস্থা, ক্লাসে উপস্থিতি ধরে না রাখার কারণে ফল বিপর্যয় ঘটেছে।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মীর মাহফুজুল হক বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষার জন্য আসন কমানো প্রয়োজন। এ জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। আমার একার পক্ষে আসন কমানো সম্ভব নয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিভিন্ন কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র আট জন ছাত্র। কম পাসের হার ও এত অল্প জিপিএ-৫ পাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।

শিক্ষকরা বলেন, ‘দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাশ হয় না। প্রায়ই ক্লাশে গিয়ে দেখি ক্লাশ ফাঁকা। শিক্ষার্থীরা নেই। শিক্ষার্থীরা ক্লাশে অনুপস্থিত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বলতে গেলে তেমন কোনও মনিটরিং নেই। কর্তৃপক্ষ শুধু সম্মান ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নিয়ে ব্যস্ত থাকে। একাদশ ও দ্বাদশ শেণির শিক্ষার্থীরা সেভাবে গুরুত্ব পায় না। ভর্তির ক্ষেত্রেও বাছ-বিচার করা হয় না। ডিজিটাল ব্যবস্থায় ভর্তির কারণে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মেধার শিক্ষার্থীরাও এখানে ভর্তি হচ্ছে। টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এসব কারণে এইচএসসি পরীক্ষার ফলে প্রভাব ফেলেছে।’

শিক্ষক ও অভিভবকরা জানান, অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের পড়ানোর সক্ষমতা নেই কলেজের। বেঞ্চের অভাবে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার সময় এক বেঞ্চে পাঁচজন করে বসানো হয়। চলতি বছর কলেজে এক হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। কোনোভাবেই এই কলেজের একাদশ শ্রেণিতে এক ৬০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে পড়ানোর সমক্ষমতা নেই।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, ‘এখানে মানবিকের এক শ্রেণিতে পড়ে ৩৫০ জন। কিভাবে একজন শিক্ষক ৩৫০ শিক্ষার্থীর একসঙ্গে ক্লাশ নেন তা বোধগম্য নয়।’

/এসএমএ/