স্থানীয়রা জানান, হাওর বেষ্টিত উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কালনি-কুশিয়ারা, ধনু, ঘোড়াউত্রা, নরসুন্দা ও সোইজনী নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এসব অঞ্চলের জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংসের ফলেই দেশি প্রজাতির মাছের অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া অবৈধ কারেন্ট জাল, ভীম জাল, মশারি জাল, বেড় জাল, কোনা বেড় জাল দিয়ে মাছ শিকার পদ্ধতিও এর জন্য দায়ী।
নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, হাওরের মাছের সুনাম সারা দেশেই রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে হাওরে দেশি মাছ খুব একটা চোখে পড়ছে না। যাও পাওয়া যাচ্ছে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
২০১২ সালে সরকারকারিভাবে নিকলী হাওরে একটি মৎস্য প্রকল্প চালু হলেও এক বছরের মাথায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি হাওরে কি কি মাছ বিলুপ্তির পথে তার কোনও তালিকাও নেই মৎস্য অধিদফতরের কার্যালয়ে।
পশ্চিম নিকলী মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি গোপাল দাস জানান, দুই যুগে প্রায় শতাধিক দেশি প্রজাতির মাছ হাওর থেকে হারিয়ে গেছে। নামাবিল, সিনং, ভূম মাছ, চেলাপাতা, কাশিখয়ারা, ধারকিনা, লালচান্দা, তিতপুঁটি, নেফটানি, নাপিত কৈ, বাঘা গোতম, নাঙ্গাটালু, গোলা, কাঙলা, মধু, আকস, পান, মাসুল, কোরাল, রানী বা রানদী, হিলুরীন, চেলা, বিলুশৈল, এলং মাছ বিলুপ্তির পথে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আর মানবসৃষ্ট নানা কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এসব দেশি মাছ। তার সঙ্গে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া এবং মৎস্য অভয়াশ্রম না থাকাতেও কমে যাচ্ছে এ অঞ্চলের দেশি প্রজাতির মাছ। এছাড়া হাওর এলাকার কৃষি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার প্রয়োগ, অবৈধ জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে মৎস্য নিধন, কীটনাশকের মাধ্যমে মাছ ধরা ও জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংসের কারণেই দেশি প্রজাতির মিঠাপানির মাছে আকাল দেখা দিয়েছে।
/বিএল/