খানখানাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লালের কাছ থেকে নিয়ে সোমবার (১১ সেপ্টম্বর) দুপুর ১টার দিকে ওই বৃদ্ধাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এনে ভর্তি করান রাজবাড়ী জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তারা। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানকার সিনিয়র স্টাফ নার্স কোহিনূর আক্তার জানান, ‘মঙ্গলবার তার শারিরীক অবস্থা একটু ভালো। তার ইসিজি ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়েছে।’
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানজিনা আফরিন জানান, ‘জরুরি বিভাগে আনা হলে দেখা যায় ওই বৃদ্ধা ভীষণ অসুস্থ। তিনি এতোই দুর্বল যে হাঁটাচলাও করতে পারেন না। তার উন্নত চিকিৎসা ও ভালো খাবারের প্রয়োজন। তবে যত্ন নেওয়া হলে কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি হাঁটতে পারবেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
রাজবাড়ী জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক রুবাইয়াত মো. ফেরদৌস জানান, বস্তায় এক নারীকে পাওয়ার খবরটি জেনে প্রথমে তিনি গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। ওই বৃদ্ধাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। এরপর তাকে রাজবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই বৃদ্ধা সুস্থ হওয়ার পর সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালনায় ফরিদপুরে অবস্থিত শান্তিনিবাসে তাকে রাখা হবে। আর এর মধ্যে তার কোনও স্বজন আসলে তাকে নিয়ে যেতে পারবেন। কেউ না নিলে বৃদ্ধ পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ মোতাবেক আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী জেলার প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, ‘যারা এই বৃদ্ধাকে বস্তাবন্দি করে ফেলে রেখে গেছে তারা নিশ্চয়ই শিক্ষিত ব্যক্তি বা পরিবার। যদি শিক্ষিত না হতো তাহলে তারা এই বৃদ্ধাকে হত্যা করতো। এই বৃদ্ধা হয়তো ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করেছেন, কিন্তু মানুষ করতে পারেন নাই। তিনি কথা বলতে পারলেও অজানা কারণে মুখ খুলছেন না।’
উল্লেখ্য গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত বৃদ্ধাকে (৬৫) উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন- রাজবাড়ীতে বস্তার ভেতর থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার