দেশের প্রথম প্রত্ন জাদুঘর ‘উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর’ উন্মুক্ত

 

দেশের প্রথম প্রত্ন জাদুঘর ‘উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর’ উন্মুক্তনরসিংদীর বেলাবতে দেশের প্রথম প্রত্ন জাদুঘর ‘উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর’ উন্মুক্ত  করা হয়েছে।  শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের উয়ারী এলাকায় এ জাদুঘর উন্মুক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্যের পোস্টারও বিতরণ করা হয়।

প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্র ঐতিহ্য অন্বেষণের নির্বাহী পরিচালক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের প্রত্ন জাদুঘর বাংলাদেশে এই প্রথম। এই জাদুঘরে প্রত্নবস্তুর মডেল, রেপ্লিকা, প্রত্নবস্তু, প্রত্নবস্তুর আলোকচিত্র, বিবরণ ও বিশ্লেষণ প্রদর্শন করা হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে প্রত্ন গবেষক ও সংগ্রাহক মো. হাবিবুল্লাহ পাঠান ও স্থানীয় চেয়ারম্যান পরশ মোল্লাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

‘উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর’ খনন কাজের দলনেতা ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উয়ারী বটেশ্বর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন মহাজনপদ, রাজধানী ও একটি দুর্গ নগর। ২০০০ সাল থেকে খনন কাজ শুরু হয়ে এ পর্যন্ত ৫০টি প্রত্নস্থান থেকে তাৎপর্যপূর্ণ প্রত্নবস্তু, ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা, উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণ মৃৎপাত্র, রোলেটেড মৃৎপাত্র, নবযুক্ত মৃৎপাত্র, ধাতব নিদর্শন, স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাঁচের পুতি, পোড়ামাটি ও পাথরের শিল্পবস্তু, বাটখারা ইত্যাদি অমূল্য প্রত্নবস্তু আবিষ্কার করা হয়েছে। চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত রাস্তা, বৌদ্ধ পদ্ম মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারিকার পাশাপাশি ইট দিয়ে নির্মিত একটি বিশেষ অদ্বিতীয় স্থাপত্য বৌদ্ধ কু-/ পুকুনিয়া আবিষ্কৃত হয়েছে।’

দেশের প্রথম প্রত্ন জাদুঘর ‘উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর’ উন্মুক্তপ্রতিবছর উৎখনন শেষে প্রত্নস্থান ও প্রত্নবস্তু দর্শনার্থীদের সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় না বলে জানান ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান। ড. সুফি বলেন, ‘অর্থাভাবে স্থায়ী সংরক্ষণের পূর্ব পর্যন্ত প্রত্মস্থানগুলো অস্থায়ীভাবে মাটি চাপা দিয়ে ঢেকে রাখা হতো এবং গবেষণার জন্য প্রত্মবস্তু ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হতো। গবেষণা শেষে তা প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরে জমা দেওয়া হতো। তাই সারাবছর দেশি-বিদেশি পর্যটক উয়ারী বটেশ্বর পরিদর্শনে এসে কিছুই দেখতে পারতেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটকদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে স্থায়ীভাবে উয়ারী বটেশ্বর দুর্গ নগর উন্মুক্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র- ঐতিহ্য অন্বেষন। এরই ধারাবাহিকতায় জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে।’