প্রথম রমজান জুমার দিন হওয়ায় শুক্রবার বেশিরভাগ প্রার্থী কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। নামাজের আগে ও পরে অনেক প্রার্থী মুসল্লীদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় ও ভোট চেয়েছেন। এছাড়া বিকাল বেলা তারা ভোটারদের বাড়িঘরের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভোট চাইতে গেছেন। প্রচারণা চালানোর সময় প্রার্থীরা নাগরিকদের নানা প্রতিশ্রুতিও দেন। শুক্রবার প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরাও ব্যস্ত সময় পার করেছেন। প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের পদচারণায় কয়েকদিনের নিস্তবদ্ধতা কাটিয়ে আবারও সরব হয়ে উঠছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ১৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী কাজী রুহুল আমিনও ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম এখনও কোনও ইশতেহার ঘোষণা করেননি।
শুক্রবার দিনব্যাপী গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। সকালে নিজের বাড়িতে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুরে সালনা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। মসজিদে গিয়ে তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় ছাড়াও সবার কাছে ভোট চান। সন্ধ্যায় নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মাস্টাবাড়িতে জামিয়াতুল উলুমিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ইফতার করেন জাহাঙ্গীর।
বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার শুক্রবার নগরীর বোর্ড বাজার এলাকার হাজী মহর খান ওয়াকফ এস্টেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে তিনিও মুসল্লিদের কাছে ভোট চান।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারিফুজ্জামান জানান, ৩১ মার্চ (শনিবার) গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ১২ এপ্রিল; যাচাই-বাছাই ১৫-১৬ এপ্রিল ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ এপ্রিল। আর নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ ছিল ১৫ মে।
তবে সাভারের এক আওয়ামী লীগ নেতার রিটের কারণে গত ৬ মে জিসিসি নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছয়টি মৌজাকে জিসিসি’র অন্তর্ভুক্ত করা গেজেট এবং নির্বাচন সংক্রান্ত তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
এরপর গত ৭ মে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। এরপর মঙ্গলবার (৮ মে) একই বিষয়ে আপিল আবেদন করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। পরে আপিল শুনানি শেষে গত ১০ মে (বৃহস্পতিবার) গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিল করার আদেশ দেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ২৮ জুনের মধ্যে এই নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এবারের জিসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৭জন, কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন।