টঙ্গীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রনির পরিবারের সঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধানের সাক্ষাৎ

পুলিশ হেফাজতে রেজাউল ইসলাম রনি

গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রেজাউল ইসলাম ওরফে বেশতি রনির (২৮) পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন অতিরিক্ত উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (এডিশনাল ডিআইজি-ঢাকা রেঞ্জ) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন। বুধবার বেলা ১২টার দিকে তিনি টঙ্গীর এরশাদ নগরের বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

বন্দুকযুদ্ধে রনির নিহতের ঘটনায় মঙ্গলবার অতিরিক্ত উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (এডিশনাল ডিআইজি-ঢাকা রেঞ্জ) আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

রনির বোন শান্তা আক্তার বলেন,‘ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অচিন্ত কুমার তাদের কাছ থেকে প্রথমে ৫০ হাজার পরে দেড় লাখ ও বিকাশের মাধ্যমে আরও ৫০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে টঙ্গী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বকর সিদ্দিক তাদের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। ওই টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য বাসা যান। ফিরে এসে শুনেন তার ভাইকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে।

রনির মা পারভীন বেগম বলেন,‘পুলিশের ওই কর্মকর্তা বুধবার বেলা ১২টার দিকে তাদের বাসায় আসেন। গাজীপুরের ডিবি পুলিশ ও টঙ্গী পুলিশ তাদের কাছ থেকে কিভাবে টাকা নিয়েছে তা জানতে চান।’

পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে তিনি জানান,গত শনিবার দুপুর দুইটার দিকে টঙ্গী এরশাদ নগরের বটতলা এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ রেজাউলকে তুলে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর শহরের ডিবির কার্যালয়ে যান রেজাউলের স্বজনেরা। পরে তিন দফায় আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার পর একটি সাদা কাগজে রেজাউলের মা পারভীনের স্বাক্ষর রেখে রেজাউলকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। এসময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা কাগজে তার বক্তব্য লিখে নেন বলে তিনি জানান। তারা রেজাউলকে নিয়ে বের হওয়ার সময় ডিবি কার্যালয়ের মূল ফটক থেকে তাকে আবারও গ্রেফতার করে টঙ্গী থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক।

রনির বাবা হাফিজুল ইসলাম বলেন,এছাড়াও পুলিশের ওই কর্মকর্তা তার ছেলের মাদকাসক্ততার ছিল কিনা এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি জানিয়েছেন,তার ছেলে রনি ইয়াবা সেবন করত। রনি মাঝে মধ্যে অল্প-স্বল্প  ইয়াবা বিক্রি করতো বলে তিনি শুনেছেন।

হাফিজুল ইসলাম বলেন,‘পুলিশের ইনফরমার ইমরান ও ফয়সালের কথায় ডিবি পুলিশ প্রায় সাত বছর আগে তার ছেলেকে একবার আটক করে মাদক ব্যবসায় গ্রেফতার দেখায়। পরে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায়।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা পরে আশপাশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিবেশী নাজমুল হোসেন ও রাবেয়া বেগম বলেন,‘তারা শুনেছেন রনি ইয়াবা সেবন ও ব্যবসা করত। তবে দেখেননি। দুপুর ১টার দিকে পুলিশের ওই কর্মকর্তা (এডিশনাল ডিআইজি) পরিদর্শনস্থল ছেড়ে যান।’

আরও পড়ুন: টঙ্গিতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটি