ধর্ষণ মামলায় সাটুরিয়ার দুই পুলিশের ৬ দিনের রিমান্ড

এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলামমানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক তরুণীকে দুই দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ডে আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে মানিকগঞ্জ ৭ নম্বর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কোর্ট  ইন্সপেক্টর  হাবিবুল্লাহ সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল মজিদ ফটো। বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নজরুল ইসলাম বাদশা। আইনজীবী বাদশা জানান, মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে দুই আসামি সাটুরিয়া থানায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আদালতের হাজির করা হয়। আদালতে তোলার পর পুলিশ ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে। তবে শুনানি শেষে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

এর আগে সোমবার রাতে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভিকটিম। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সাটুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ওই তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষা সোমবার রাতেই সম্পন্ন হয়েছে। পরে মঙ্গলবার ভোরে অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।’মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত

নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী রবিবার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেন মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান ও ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দীকী। সোমবার প্রাথমিক তদন্তের পর তারা জানান, অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, লিখিত অভিযোগে ওই তরুণী দাবি করেন,  সাটুরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন তার খালার কাছ থেকে ৫ বছর আগে এক লাখ টাকা নেন। লাভসহ ফেরত দেওয়ার কথা বলে এই টাকা নেন তিনি। কিন্তু বারবার ফেরত চেয়েও টাকা পাওয়া যাচ্ছিল না। পাওনা টাকা আনতে বুধবার বিকাল ৫টার দিকে খালার সঙ্গে সাটুরিয়া থানায় যান তিনি। সেখানে সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে দেখা হলে তিনি দুইজনকে নিয়ে সাটুরিয়া ডাকবাংলোয় যান। কিছুক্ষণ পরে সেখানে উপস্থিত হন একই থানার আরেক এএসআই মাজহারুল ইসলাম। কিছুক্ষণ পর তাকে ও তার খালাকে আলাদা ঘরে নিয়ে আটকে রাখে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে ইয়াবা সেবনে বাধ্য করা হয়। পরে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আটকে রেখে তাদের দুইজনকে ডাকবাংলো থেকে বের করে দেয় তারা। মুক্ত হয়ে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন- 

সাটুরিয়ায় তরুণীকে ধর্ষণ মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার

দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ধর্ষণের অভিযোগ: পুলিশ বলে দুই কর্মকর্তাকে ছাড় দেওয়া হবে না, দাবি এসপির