আসামি শামসুর রহমান ইসলামী ব্যাংক লি. এর শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা শাখায় সহকারী কর্মকর্তা কাম ক্যাশ পদে কর্মরত ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তার চাকরি চলে যায় এবং তিনি আত্মগোপন করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২০ মার্চ ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুর দুপুর ১টার দিকে নামাজ পড়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে বের হন। পরে তিনি আর ব্যাংকে ফিরে আসেননি। ওইদিন বিকেলে ব্যাংকের ব্যাবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় অতিরিক্ত (ডুপ্লিকেট) চাবি দিয়ে ক্যাশ রাখার বাক্সটি খুলেন। সেখানে থেকে হিসাব মিলিয়ে দেখা যায় নির্দিষ্ট টাকার চাইতে ক্যাশে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা কম রয়েছে। পরে ওইদিনই ব্যাংকের ব্যাবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ডামুড্যা থানায় শামসুর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর এ মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব নেন দুর্নীতি দমন সমন্বিত ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল।
তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, শামসুর রহমান ওই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব গ্রহিতা নূর জাহানের ৩০ হাজার টাকা, মতি ফকিরের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও চাঁন মিয়ার ৩২ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। পরে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ সহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল গ্রাহক ও ব্যাংকের মোট ৪ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে শামসুরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
দুদকের পিপি মো. মজিবুর রহামন বলেন, ‘বুধবার আদালত দুটি ধারায় শামসুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় যাবজ্জীবন স্বশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছর স্বশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ১ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।’
পিপি আরও বলেন, ‘শামসুর রহমানকে দুটি সাজা একই সঙ্গে ভোগ করতে হবে। তবে তিনি ২০১২ সালের ২০ মার্চ থেকে এখনও পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দিনই তাকে ব্যাংকের কর্মকর্তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।