নিউ জিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের একজন নারায়ণগঞ্জের ওমর ফারুক

ওমর ফারুক

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত ৪৯ জনের একজন নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ওমর ফারুক। তার পরিবার জানায়, নিউজিল্যান্ডে থাকা ওমর ফারুকের সহকর্মী ও বন্ধুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওমর ফরুকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের উপ- প্রধান তারেক আহমেদও।
খবর পাওয়ার পর রাতে বন্দরের রাজবাড়ী এলাকায় ফারুকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা স্বজনরা ভিড় করছেন। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। ফারুকের মা রহিমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। অনেকে তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু কোনও কিছুই তাকে থামাতে পারছে না। তার একটাই দাবি, ছেলেকে অক্ষত অবস্থায় যেন তার বুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমি কী শুনলাম। কী হয়ে গেলে ওমর ফারুকের। গত বৃহস্পতিবারও সে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। তার কিছু হয়ে গেলে আমি কী নিয়ে বাঁচবো। কী করে ছোট মেয়েকে বিয়ে দেবো? কে টাকা দেবে?
চার ভাইবোনের মধ্যে ওমর ফারুক দ্বিতীয়। একমাত্র উপার্জনক্ষম ভাইকে হারিয়ে দিশেহারা বোনেরা।
২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমান ওমর ফারুক। সেখানে তিনি কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর দেশে ছুটিতে এসে বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার সানজিদা জাহান নেহাকে বিয়ে করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ছুটিতে দেশে আসেন এবং এ বছরের ১৮ জানুয়ারি আবার নিউজিল্যান্ড যান।

ওমর ফারুকের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জাহান নেহা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার একটাই চাওয়া, উনি যেন নিজের সন্তান মনে করে স্বামীর লাশটা আমার বুকে ফিরিয়ে দেন।’
ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি সানোয়ার হোসেন জানান, প্রথমে শুনতে পেলাম ওমর ফারুক গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের খবরে জানতে পারি তিনি গুলিতে নিহত হয়েছেন।