ভবন পরিত্যক্ত, দোকানে পাঠদান

দোকানে পাঠদান (ছবি– প্রতিনিধি)

বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত। তাই পাশের বাজারে দু’টি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে সেখানেই পড়ানো হয় শিক্ষার্থীদের।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে টাঙ্গাইলের সখীপুরের কৈয়ামধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ছাদে ফাটল ও পলেস্তারা উঠে যাওয়ায় এ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম পাশের বাজারে দু’টি টিনের দোকানঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে পাঠদান শুরু করেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান করা হয় না। তবে ঝুঁকি নিয়ে অফিশিয়াল কাজ করেন শিক্ষকেরা। আর যে দুইটি দোকানঘরে পাঠাদান করানো হয়, একহাজার টাকা করে সে দুই ঘরের ভাড়া দেন প্রধান শিক্ষক। টিন সেডের ওই ঘর দু’টিতে শিক্ষার্থীদের জায়গা হয় না।

এই দুই দোকানঘরে পাঠদান চলে (ছবি– প্রতিনিধি)

কৈয়ামধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে চার কক্ষের ওই ভবন নির্মাণ করা হয়। এ বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ভবনের ছাদের ঢালাই ভেঙে বিভিন্ন স্থানে রড বের হয়ে গেছে। বর্তমানে ভবনের প্রতিটি জয়েন্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনও সময় ওই ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনের ছাদ, পিলার ও ভিম ফেটে গেছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে ছাদ ঠিকয়ে ক্লাস চলছিল। মাঝে মধ্যেই ক্লাস চলাকালীন সময়ে পলেস্তারা ভেঙে পড়তো। বিষয়টি দীর্ঘদিন সংশ্লিষ্টদের জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেননি। পরে ইউএনও স্যার এসে ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর বিকল্প কোনও পথ না পেয়ে বিদ্যালয়ের পাশের বাজারে টিনের ঘর ভাড়া করে কোনও রকমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ওই ঘরটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সাময়িকভাবে ক্লাস চালানোর জন্য টিনের ঘর তৈরি বাবদ শিক্ষা অফিস থেকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু এখনও তা পাইনি।’

বাঁশ দিয়ে ছাদের ধসে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা (ছবি– প্রতিনিধি)

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্রে দাশ বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, ‘নতুন পাকা ভবন বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। সাময়িকভাবে ক্লাস চালানোর জন্য টিনের ঘর তৈরি বাবদ সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে, কিন্তু ছাড় হয়নি।’