টাঙ্গাইলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

 

প্লাবিত এলাকাটাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় অর্ধশত গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্য সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় গরু-ছাগল ও পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁধ ও উঁচু বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যাকবলিতরা। পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বন্যাকবলিত এলাকাজেলার ভূঞাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার মধ্যে গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও গোবিন্দাসী, নিকরাইল, ফলদা ও পৌর সভা আংশিক প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার পরিবারের এক লাখ ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।’ এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

প্লাবিত এলাকাস্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার মাহমুদ নগর, নাগরপুর উপজেলার কয়েকশ পরিবার ও মির্জাপুরের বংশাই নদীর তীরবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, ভাঙন রোধে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘গাবসারা ইউনিয়ন পুরোটাই তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যায়নি।’

বন্যার পানি বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছেএদিকে, বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে ভূঞাপুরের তারাই এলাকায় বাঁধ ভেঙে নতুন করে আরও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক।

টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনা, পুংলী, ঝিনাই, বংশাই ও ধলেশ্বরীর নদীতে পানি বেড়েছে। এর মধ্যে যমুনার পানি বিপদসীমার ৭২ সে.মি., ধলেশ্বরীর দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ব্রিজের কাছে বিপদসীমার ৮৯ সে.মি. এবং ঝিনাই নদীর কালিহাতী উপজেলার যোকারচর এলাকায় বিপদসীমার ৪৫ সে.মি. ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পুংলী ও বংশাই নদীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে।’ আগামী দুই দিন পানি আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

প্লাবিত এলাকার পানিবন্দি মানুষের কয়েকজনটাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বন্যায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। বন্যাকবলিতদের জন্য ২০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ তিন লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তা বিতরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আরও তিনশ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।’