পেটে গজ-কাপড় রেখে সেলাই, প্রসূতির মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ভুল চিকিৎসায় আমান্তিকা নামের এক প্রসূতি মারা গেছেন। সিজারের পর তার পেটে গজ-কাপড় রেখে কাটা স্থান সেলাই এবং জরায়ু কেটে ফেলায় ওই প্রসূতি মারা যান। সোমবার ( ৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় বেসরকারি সোনারগাঁও জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ক্লিনিক ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা।
পুলিশ জানায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বড় সাদিপুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হলে নিয়মিত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকালে তাকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার সোনারগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. নূরজাহান বেগম ওইদিনই রোগীকে সিজার করার পরামর্শ দেন।
বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে রোগীর সিজার করানো হয়। পরে আমান্তিকার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু সিজারের পর তাড়াহুড়ো করে তার পেটে গজ-কাপড় রেখেই ডা. নূরজাহান কাটা স্থান সেলাই করে দেন। এতে রোগীর পেট ফুলে যায় ও বমি হয়। রোগীকে ফের ওই ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসলে তিনি তাকে নারায়ণগঞ্জ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ডাক্তার নূরজাহান কেয়ার হাসপাতালে গিয়ে আবার ওই রোগীর সিজার করিয়ে জরায়ু কেটে ফেলেন। এতে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকার গেন্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে পাঠানো হলে সোমবার ভোরে আমান্তিকা মারা যান।
এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা সোমবার দুপুরে সোনারগাঁও জেনারেল হাসপাতালে এসে ক্লিনিকের পরীক্ষাগার, মেশিনপত্র, গ্লাস, দরজা জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের বাবা সোহেল মিয়ার অভিযোগ, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তারা মেয়ে মারা গেছে। তিনি ওই ডাক্তারের বিচার দাবি করেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাঙচুর হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ স্বজনদের পুলিশ বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’