‘যার জমি আছে ঘর নেই,তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’উপ-খাতের আওতায় হতদরিদ্র্য পরিবারকে এক লাখ টাকায় ঘর বিনামূল্যে করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। ঘর অনুমোদনের খরচের কথা বলে মুমুরদিয়া ইউনিয়নের অন্তত ২০০ দরিদ্র্য পরিবারের কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকা করে নেয় চেয়ারম্যান সায়দুজ্জামান সৈয়দু। স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় তিনি এ টাকা নেন। টাকা নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে ঘর নির্মাণের কথা থাকলেও দেড় বছরে ঘর পাননি তারা।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘবেড় গ্রামের মল্লিকা খাতুন বলেন, ‘আমার ঘর নির্মাণ করে দেবে বলে চেয়ারম্যান ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। মেম্বার রতন মিয়াও বিষয়টি জানেন। আমার মতো অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছেন তিনি। কেউ কেউ ঘর পেলেও আমি এখনও পাইনি, টাকাটাও ফেরত পাচ্ছি না।’
মুমুরদিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলী আকবর বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাদের বলেছিলেন অফিস খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দিলেই ঘর মিলবে। আমি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা চেয়ারম্যান সৈয়দুজ্জামানের কাছে জমা দিয়েছি। এখন আমি এলাকায় মুখ দেখাতে পারছি না। টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না তিনি।’
৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রতন মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান অফিস খরচ বাবদ টাকা ১৫-২০ হাজার টাকা করে দাবি করেছিলেন। এ টাকা দিলেই ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। আমার ওয়ার্ডের অনেক মানুষ ধারদেনা করে তাকে টাকা দিয়েছেন। এখন প্রতিদিন ঘরের বিষয়ে জানতে মানুষ আমার বাড়িতে ভিড় করে। আমি কোনও উত্তর দিতে পারি না। চেয়ারম্যানকে বললেও তিনি বিষয়টি সুরাহা করছেন না।’
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দুলাল চন্দ্র সুত্রধর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার তালিকার একটি প্রকল্প। যাদের জমি আছে আমরা সরকারিভাবে তাদের ঘর সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দিচ্ছি। যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আমরা কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, শিগগিরই ঘর অথবা টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হতদরিদ্র পরিবারগুলো।