সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের নরসিংদী জেলায় রয়েছে ৫২ কিলোমিটার সড়ক। মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, সড়কের উভয় পাশের ১০ মিটার দূরত্বে স্থাপনা তৈরির নিয়ম রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, জমি অধিগ্রহণের সময় সরকারের কাছ থেকে বাড়তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় মহাসড়ক ঘেঁষে উভয় পাশে গড়ে তোলা হয়েছে দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে বাড়িঘর, মার্কেট ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে ভবন। গত ৬-৭ মাস ধরে চলছে বহুতল বিশিষ্ট এসব অবৈধ স্থাপনা তৈরির কাজ। স্থানীয় প্রশাসন ও সড়ক কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার পরও বেশকিছু ভবন তৈরির কাজ চলছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী চক্র এসব স্থাপনা তৈরিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
মহাসড়কের শিবপুর উপজেলার চৈতন্যা এলাকার একটি ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক জানান, তিনতলা এই ভবনটির মালিক শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে তাপসের স্ত্রী। তাপস নিজে এটি তদারকি করছেন। কারখানা গড়ে তোলার জন্য ভবনটি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আরেকটি নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিক জানান, চারতলা এই ভবনের নিচে গরুর ফার্ম, ওপরে কমিউনিটি সেন্টার হবে। অন্য কক্ষগুলো ভাড়া দেওয়া হতে পারে। তিন মাস আগে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এভাবে মহাসড়কের শিবপুরের কারারচর থেকে ভৈরব পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার বলেন, সড়কের পাশে আগের অবস্থা ভিডিও রেকর্ডিং করে প্রকল্প পরিচালক দফতরে পাঠানো হয়েছে। চলমান এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ১৬৪টি স্থাপনা মালিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মহাসড়ক আইনের শর্ত উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।
জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, সড়কের ভিডিওসহ একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। বিল্ডিংগুলোর বিষয়ে পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ অনুমোদন দিয়ে থাকে। উন্নয়ন সমন্বয় মিটিংয়ে বলা হয়েছে পৌরসভা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষ যাতে অনুমোদনবিহীন বিল্ডিংগুলো অপসারণে ব্যবস্থা নেয়।