মায়েদের নিয়ে সমাবেশ করলেন ইউএনও

 

মায়েদের নিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ইউএনও

শতভাগ শিশু ভর্তি ও ঝরেপড়া রোধ নিশ্চিত করতে এ স্লোগানকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শত শত মায়ের উপস্থিতিতে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক মঞ্চের আসন ছেড়ে দর্শকদের সাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দাড়িয়ে বক্তব্য রেখে অনুষ্ঠানটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন। শুক্রবার দুপুরে ৭৩ নং ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাবিনা নার্গিস, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সালমা সুলতানা, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মীর ফয়সাল আলী প্রমুখ।

ইউএনও নাহিদা বারিক যখন বক্তব্য রাখছেন এবং দর্শক সাড়িতে বসা এক মা তখন কান্না করছেন দেখে তিনি বক্তব্য বন্ধ রেখে ওই মাকে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরেন। ওই মায়ের কান্নার কারণ জানতে চায়। পরে ওই মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার সমস্যার কথা জানান। সন্তানদের লেখাপড়া করানোর ইচ্ছে থাকলে সাধ্য না থাকার কারণে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ কারণে ইউএনও’র বক্তব্য শুনে তিনি কান্না ধরে রাখতে পারেননি। ওই মায়ের কান্নার কারণ জানতে পেরে ইউএনও নিজেও কেঁদে ফেলেন এবং ওই মাকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। অর্থের অভাবে দুই সন্তানের লেখাপড়া যেন বন্ধ হয়ে না তার জন্য অনুরোধ করেন এবং সন্তানদের লেখাপড়ায় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, ‘প্রতিটি মায়ের উচিৎ তার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিসছে এবং ঠিকমত লেখাপড়া করছে কিনা। সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করতে হলে সর্ব প্রথম মায়ের ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সন্তানের প্রতি মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়েদের সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। মায়েরা যেন তাদের সন্তানদের বাল্যবিবাহ না দেন সেদিকে সচেতন হতে হবে। এসময় উপস্থিত মায়েরা তাদের সন্তানদের বাল্য বিবাহ না দেওয়ার জন্য হাত তুলে ওয়াদা করেন।

অনুষ্ঠান শেষে ওই স্কুলের নির্মানাধীণ শহিদ মিনারসহ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার উদ্বোধন করেন ইউএনও নাহিদা বারিক। এসময় তিনি ফতুল্লার ৪টি স্কুলে ১৪ জোড়া বেঞ্চ দেন।