মাদারীপুরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশনে কলেজছাত্র

মাদারীপুরমাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের এক কলেজছাত্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার (২৭ মার্চ) ভোর রাতে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থী ঢাকায় থেকে একটি কলেজে লেখাপড়া করতেন। সরকারিভাবে অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণার পর গত ২৫ মার্চ মাদারীপুরে ফিরে আসেন তিনি।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোর রাতে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথাসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা ছিল।  ঠাণ্ডা ও জ্বরের কথা বলায় তাকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তার শরীরে করোনা ভাইরাস আছে কিনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফল এলেই বিস্তারিত বলা যাবে। তবে তার বিভিন্ন অসুস্থতার চিকিৎসা দেওয়ার পর শনিবার রাত থেকে তিনি অনেকটা সুস্থ আছেন।

অসুস্থ ওই  শিক্ষার্থীর বড় ভাই বলেন, ‘আমার ভাই ঢাকার একটি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।  ঢাকার বাড্ডায় একটি মেসে অন্যদের সঙ্গে ছিল। আগে থেকেই সে বুকে ব্যথার কথা বলতো। গত চার মাস ধরে এই ধরনের সমস্যায় ছিল। মেসে থাকার কারণে তার খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা হতো, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছিল। শুক্রবা রাতে শ্বাসকষ্ট হওয়ায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। শনিবার রাতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। ডাক্তারদের দেওয়া ওষুধ খেয়ে রাতে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। রাতে সে খাবার খেয়েছে এবং এখন অনেকটা সুস্থ ।’

এদিকে শনিবার দুপুরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে ওই এলাকার মসজিদে ও ভ্যানে করে মাইকিং করা হয়। এতে এই কলেজ শিক্ষার্থীর নাম ও পরিবারের নাম উল্লেখ করে মাইকিংয়ে  বলা হয় যে, ওই শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত, তাদের সঙ্গে কেউ মিশবেন না। বাঁশাগাড়ি এলাকাকে লকডাউন করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ‘কালকিনি এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে অবরুদ্ধ করা হয়নি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এই মাইকিং করেছে বলে আমরা জেনেছি। এভাবে মাইকিং করা ঠিক হয়নি।’

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, ‘মাদারীপুর সদর হাপসাতালে গত দু’সপ্তাহ ধরে কোয়ারেন্টিনে ও আইসোলেশনে যে ৬ জন ছিল, তাদের সবাইকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। ওই শিক্ষার্থী ছাড়া আর কেউ আইসোলেশনে নেই। করোনা শনাক্ত না করে এবং আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করে ওই এলাকায় মাইকিং করা ঠিক হয়নি।  স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা  মতে, আমরা কোনও রোগীর নাম প্রকাশ করি না। বাঁশগাড়ি এলাকার ওই শিক্ষার্থী সম্ভবত করোনা আক্রান্ত নয়, তবুও আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠিয়েছি।’