চাহিদা মিটিয়েও ৫৫ লাখ টন চাল অবশিষ্ট থাকবে: কৃষিমন্ত্রী

করোনাকালীন চালের মজুদ নিয়ে ভার্চুয়াল সেমিনারকৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, করোনাকালীন চরম অনিশ্চিয়তায় ধান উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ধান নির্ভর, সে জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ, বাজার পর্যালোচনা, আপদকালীন সংকটের আশঙ্কা এবং চালের রাজনৈতিক স্পর্শকাতর দিকসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিচার-বিবেচনার পরই চাল আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী রবিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ যুগে খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশ কি অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য সংকটে পড়ছে?’ শীর্ষক ওয়েবিনার ভিত্তিক জাতীয় সেমিনারে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তসহ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। চালের মজুদ নিয়ে অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।

ব্রি’র মহাপরিচালক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জানান, দেশে বর্তমানে খাদ্য ঘাটতি নেই। গত বছরের তুলনায় এ বছর সারা দেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ১৬ দশমিক ৫০ কোটি লোকের চাহিদা মেটানোর পরও ওই মাস শেষে ৫ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন টন চাল উদ্ধৃত্ত থাকবে, যা দিয়ে পরবর্তী ৫০-৭৮ দিনের চাহিদা পূরণ করা যাবে। নভেম্বরের মধ্যে এর সঙ্গে যুক্ত হবে আউশ ও আমনের উৎপাদন। ফলে বাংলাদেশে আপাতত খাদ্য ঘাটতির কোনও আশঙ্কা নেই।

মহাপরিচালক নিজস্ব জরিপ গবেষণার বরাতে জানান, গত বোরো ও আমন মৌসুমের উদ্ধৃত্ত ধরে জুন পর্যন্ত দেশে ২ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টন চালের মজুদ ছিল। এ বছর বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে ২ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ডিএপি সারের দাম কমানো কৃষক প্রশিক্ষণসহ সরকারের নানা পদক্ষেপ এবং উপযোগী আবহাওয়া ও ব্যবস্থাপনার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো চাষীরা লোকসানের পরিবর্তে বেশ লাভবান হয়েছেন।  
কোভিড-১৯ কালীন খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ধানের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনা এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয় নির্ধারণ করা ছিল এ অনলাইন মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমে আয়োজিত সেমিনারের উদ্দেশ্য।
ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান, খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ পুলের সদস্যবৃন্দ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দপ্তর-সংস্থার প্রধানগণ, বিভিন্ন দাতা সংস্থা, এনজিও এবং সংশ্লিষ্ট অন্য প্রতিষ্ঠানের শতাধিক প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।