রিকশাচালক ইদ্রিস হত্যার রহস্য উন্মোচিত

স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় প্রাণ দিতে হয়েছে ইদ্রিস আলী ইদু (৫০) নামের এক রিকশাচালককে।  মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ফরহাদ হোসেন (৪৫) নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ী। গত ৪ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের বেউথা এলাকার রিকশাচালক ইদ্রিস আলী পাশের আন্ধারমানিক গ্রামে নিহত হন।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. টুটুল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জানুয়ারি জেলার সদর উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের একটি অনাবাদি জমি থেকে রিকশাচালক ইদ্রিস আলীর লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নয়ন হোসেন বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্ত নেমে সুরতহাল থেকে নিহতের পকেটে চারজনের নাম লেখা কাগজ পাওয়া যায়।

প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই মামলার আসামি শনাক্ত ও মামলার রহস্য উন্মোচনে সরাসরি নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ভাস্কর সাহা পিপিএম।

ভাস্কর সাহা জানান, নিহতের পকেটে চার জনের নাম লেখা একটি কাগজ ছিল। তদন্ত শুরু হয় সেই ব্যক্তিদের ঘিরে।  তদন্তে প্রতীয়মান হয় কাগজে নাম লেখা চার ব্যক্তি ইয়াবা ব্যবসায়ী। তবে ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে আরও তদন্ত করা হয়। এরপর ওই রাস্তার পাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ফরহাদ হোসেন নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হওয়া যায় ফরহাদ ঠিক ওই ঘটনার আগমুহূর্ত থেকে তার মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে রেখেছে।

মামলার তদন্তারী কর্মকর্তা এসআই টুটুল উদ্দিন বলেন, এরপর ১০ জানুয়ারি ফরহাদকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে, চিরকুটে নাম লেখা চার ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক বিরোধ রয়েছে তার। এরপর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইদ্রিসের স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করার অভিযোগ রয়েছে ফরহাদের বিরুদ্ধে। এরপর ফরহাদ জেরায় স্বীকার করে তাদের পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ার কারণেই ইদ্রিসকে বেউথা থেকে কৌশলে আন্ধারমানিক গ্রামে ডেকে নিয়ে মাফলার পেঁচিয়ে হত্যা করে সে। এ কাজে তার আরেক সহযোগী জড়িত ছিল। আর এ ঘটনার পর তার মাদক ব্যবসায়ের প্রতিপক্ষ চার জনের নাম সে লিখে রিকশাচালক ইদ্রিসের জামার পকেটে রেখেছিল।   

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে মানিকগঞ্জ ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পারভেজ আহমেদ এর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা আবারও স্বীকার করেছে ফরহাদ।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, ফরহাদের সহযোগীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।