জাবির তিন হল সিলগালা, আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

টানা তিন দিন ধরে চলা আন্দোলন মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) স্থগিত থাকলেও আগামীকাল বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজুল হক।

সিরাজুল হক বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এখন হল ছাড়তে রাজি না। আজকে আমাদের আন্দোলন স্থগিত থাকলেও আগামীকাল থেকে অব্যাহত থাকবে।’ কর্তৃপক্ষের কাছে জাহাঙ্গীরনগরের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করার দাবি জানান তিনি। এ সময় আন্দোলনরত ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, বিকাল থেকেই হল ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এখন পর্যন্ত পাঁচটি হল শিক্ষার্থীশূন্য হওয়ায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাঁচটি হলের মধ্যে তিনটি হল সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

শহীদ রফিক-জব্বার হল, শহীদ সালাম-বরকত হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সিলগালা করা হয়েছে। বাকি আ.ফ.ম. কামাল উদ্দিন হল ও মীর মশাররফ হোসেন হলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার পর স্ব-স্ব হল প্রাধ্যক্ষ টিম নিয়ে হলে যান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর পর ইতোমধ্যে তারা পাঁচটি হল ছেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘যে হলগুলো থেকে এখনও শিক্ষার্থীরা বের হয়নি, তাদের দায়ভার কর্তৃপক্ষের না। কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আর হল ছাড়ার ব্যাপারে কথাও বলবে না।’

সিলগালা করা হয়েছে হলপ্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘যদিও বাকি চারটি হল থেকে শিক্ষার্থীরা আস্তে আস্তে বের হয়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্বাহী আদেশ না মেনে শিক্ষার্থীরা যদি হলে অবস্থান করতে চায় তাহলে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ দেখবে।’

শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় আদেশ মানতে অনুরোধ করলে তারা হল থেকে চলে যায়। এখন হল সিলগালা অবস্থায় আছে।’

এদিকে, বঙ্গমাতা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে তারা চলে যায়। কাউকে জোর করতে হয়নি। হল এখন সিলগালা অবস্থায় আছে।’

শহীদ সালাম বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বোঝানোর পর তারা হল ছেড়ে দিয়েছে। হল ছেড়ে দেওয়ার পর আমরা সিলগালা করে দিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি শিক্ষার্থীরা শিগগিরই হল ত্যাগ করে সরকারের আদেশ মান্য করবে।’

এদিকে, হলে তালা ঝুলানোর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তারা আবার হলে উঠবেন। এত তাড়াতাড়ি হল ছাড়বেন না।