হেফাজতের মামলায় এবার উপজেলা জাপা সভাপতি গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারি ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুর রউফ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ওই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম।

গ্রেফতার আব্দুর রউফ এর আগে উপজেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে দলত্যাগ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়সহ যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর করার ঘটনায় মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় সম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান জানান, আব্দুর রউফ চেয়ারম্যানকে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ আদালতে পাঠিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা খাতুন আগামীকাল (মঙ্গলবার) রিমান্ড শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে আসামিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ। বিএনপির সমর্থনে পর পর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ছেড়ে বর্তমান জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। পরে তৃতীয়বারের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুল রউফ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা দায়ের পর পুলিশ তদন্ত করে এই হামলা ভাঙচুরের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে।

তিনি বলেন, কে কোন দল করে সেটা পুলিশের কাছে মুখ্যবিষয় নয়। সোনারগাঁয়ে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুরের সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয় উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সাধারন সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমানে জাতীয় পার্টির নেতা ফারুক আহমেদ তপন, জাতীয় পার্টির নেতা খাজা গরীবে নেওয়াজকে।

গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে এক নারীসহ ঘেরাও করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর সমর্থকেরা ওই রিসোর্টে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ করে নাশকতা চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বাদী হয়ে পাঁচটি মামলা করেন। মামলায় ৪৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে ১ হাজার ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাত মামলায় পুলিশ মোট ৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।