বোঝার উপায় নেই নারায়ণগঞ্জে চলছে লকডাউন

নারায়ণগঞ্জে লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন তৎপর হলেও তা মানছে না সাধারণ মানুষ। বিনা প্রয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে বাইরে অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। মানুষের ঢল দেখে বোঝার উপায় নেই নারায়ণগঞ্জে চলছে লকডাউন।

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বুধবার (২৩ জুন) সকাল থেকে নগরীর চাষাঢ়াসহ বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে ৩০টি চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। একই সঙ্গে জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ১৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এরপরও মানুষ ও যানবাহনের চলাচল ঠেকানো যায়নি।

তবে বন্ধ রয়েছে নগরীর সব মার্কেট, বিপণিবিতান ও দোকানপাট। কিন্তু পাড়া-মহল্লার দোকানপাট ও কাঁচাবাজার খোলা রয়েছে। রাস্তায় মানুষের চলাচলও ছিল অন্যান্য দিনের মতো।

লকডাউনের বিধিনিষেধ অনুযায়ী লঞ্চ, ট্রেন, দূরপাল্লার বাস-ট্রাক বন্ধ থাকলেও নছিমন, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক ও প্রাইভেটকারসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল করেছে। দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে এসব যানবাহন চালকের বিরুদ্ধে।

গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি নিয়ে কর্মস্থলে যেতে হয়

যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, লকডাউন দিলেও তাদের অফিস বন্ধ হয়নি। গণপরিবহন চলাচল না করায় ভোগান্তি নিয়ে তাদের কর্মস্থলে যেতে হয়। চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত যেতে ৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা নিচ্ছেন সিএনজিচালকরা। একই স্থানে আগে অটোরিকশা ও ইজিবাইকে যেতে ২০ টাকা ভাড়া লাগতো। এখন ৫০ টাকা করে নিচ্ছেন তারা।

ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মচারী আমিন উদ্দিন বলেন, অন্যান্য সময় চাষাঢ়া থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে খরচ হতো ৭০ টাকা। এখন খরচ হচ্ছে ২০০ টাকা। লকডাউন দিলে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ডে মানুষের সমাগম। একটি সিএনজি, ইজিবাইক এলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। ভাড়া দ্বিগুণ হলেও গাড়ি পেতে কষ্ট হয়েছে অনেকের।

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ডে মানুষের সমাগম

বেসরকারি একটি ফার্মের চাকরিজীবী হোসনে আরা বলেন, সানারপাড় থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে ৫০ টাকা লাগতো। লকডাউন শুরুর পর ২০০-২৫০ টাকা লাগছে। কাজ করে যা আয় হয় তা গাড়ি ভাড়াই চলে যায়। লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস কারখানা বন্ধ রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক ওমর ফারুক বলেন, ঢাকা থেকে যেকোনো পরিবহন নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে চাইলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আট কিলোমিটারে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। পরে যানজট নিরসন হয়ে যায়।

লকডাউনে জনসমাগমের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে মহাসড়কে কাজ করছে। জেলা থেকে গণপরিবহন ঢাকায় যেতে পারেনি এবং ঢুকতেও পারেনি। তবে কিছু প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলকে যৌক্তিক কারণে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় গাড়ি না থাকায় মানুষের সমাগম ছিল। তবে লকডাউন পুরোপুরি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে পুলিশ।