নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের পর ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়েও আগুন পুরোপরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর কারখানার অভ্যন্তর থেকে লাশগুলো বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা।
জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আল আরিফিন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে উদ্ধার হওয়া লাশ ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে কারখানায় আগুনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৩ জনের নাম-পরিচয় পেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
প্রতিষ্ঠানটির এডমিন ইনচার্জ সালাউদ্দিন মিয়া জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় সেকশনের পাঁচটি ফ্লোরে প্রায় চারশ' শ্রমিক ওভারটাইম করছিলেন।
আগুনে পোড়া লাশের সারি, স্বজনদের আহাজারি
এরআগে, আগুনে তিন জনের নিহতের তথ্য জানানো হয়। এরা হলেন- স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৪৩) মোরসালিন (২৪)। নিহত স্বপ্না হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গুলডুবা এলাকার যতীন সরকারের স্ত্রী ও নিহত মীনা কিশোরগঞ্জের কমিরগঞ্জ উপজেলার উত্তরকান্দা কুকিমাদল গ্রামের হারুনের স্ত্রী। তারা উভয়ই কারখানার ওডি সেকশনের শ্রমিক বলে নিশ্চিত বরেন সেখানকার অপারেটর আজিজ মিয়া।
এছাড়া আগুনে আহত হয়েছেন আরও প্রায় অর্ধশত শ্রমিক। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন রূপগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদফতরের একজন প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন:
আগুনে পোড়া লাশের সারি, স্বজনদের আহাজারি
দীর্ঘ সময়েও আগুন নেভাতে না পারায় স্থানীয়দের হামলা
যে কারণে দীর্ঘ সময়েও নিয়ন্ত্রণে আসেনি জুস ফ্যাক্টরির আগুন
১৭ ঘণ্টায় নেভেনি জুস কারখানার আগুন, নিহত ৩
কান্না চোখে স্বজনের খোঁজ (ফটো স্টোরি)
নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন, হাতিয়ার ৩ শ্রমিক নিখোঁজ