সাফারি পার্কে বেড়েছে প্রাণী, গাছে গাছে পাখির বাসা 

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় দীর্ঘ পাঁচ মাসের মতো বন্ধ ছিল গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকে পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য ‍খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে লকডাউনের মধ্যে দর্শনার্থীশূন্য পার্কটি পরিণত হয় প্রাণী ও পাখির রাজ্যে। এখানকার বেশিরভাগ প্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে। কোলাহল না থাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়েছে পাখির সংখ্যাও। সব মিলে পার্কটি প্রাণ-বৈচিত্র্যে অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। 

ব্লু-ওয়াইল্ডবিস্টপার্কের সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান বলেন, শুক্রবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য পার্ক খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে লকডাউনে বন্ধ থাকা অবস্থায় প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। এখানের বন্য প্রাণীগুলোর প্রজনন বেড়েছে। ওয়াইল্ডবিস্টের ছয়টি বাচ্চা হয়েছে। ছয়টি জেব্রার বাচ্চা হয়েছে, এর সংখ্যা এখন ২৯। হরিণ বাচ্চা দিয়েছে ১৫টি। ময়ূরের বাচ্চা হয়েছে ৩৫টি। এসব প্রাণীর জন্ম খুব স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে, কারণ কোনও কোলাহল ছিল না, লোকজনের ডিস্টার্ব ছিল না। বর্তমানে এগুলো দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষণের কারণ হবে বলে জানান তিনি।

ময়ূরপার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশেও পরিবর্তন এসেছে। এখানকার গাছগুলোতে অসংখ্য পাখি বাসা বেঁধেছে। পানকৌড়ি, তেলা ঘুঘুসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখি, বক দিয়ে ভরপুর চারপাশ। যে পাখিগুলো বাসা বেঁধেছে, সেগুলো বাচ্চাও দিয়েছে। সবমিলিয়ে পার্ক এখন প্রাণী ও পাখির রাজ্যে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কোর সাফারিতে কর্মীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। কিছু কিছু হিংস্র প্রাণী এখনও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

লকডাউন শেষে শুক্রবার খুলে দেওয়ার পর পার্কে বাড়ছে দর্শনার্থীপার্কে ঘুরতে এসেছেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বুলবুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাত বন্ধু মিলে ঘুরতে এসেছি। পার্কের ভেতর সবুজের সমারোহ এবং প্রাণ ও জীব বৈচিত্র্য মুগ্ধ করেছে। 

ফিরোজ আলম রাজশাহী থেকে এসেছেন ঘুরতে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে অনেকটা বন্দিদশায় ছিলাম। পার্ক খুলে দেওয়ায় প্রকৃতির কাছাকাছি আসতে পেরে মনটা ভালো হয়ে গেছে। 

বাঘের বাজার থেকে সাফারি পার্কের সংযোগ সড়কের বেহাল অবস্থাতবে পার্কের সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা। লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বদরুল হোসেন মিলন পার্কে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার থেকে পার্কের যে সংযোগ সড়ক রয়েছে, এটা চলাচলের জন্য একবারেই অনুপযোগী। এ সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন। ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কার করা হলে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমতো।