উচ্ছেদ বন্ধে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের ছাত্রলীগ নেতার হুমকি! 

বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গালাগালসহ উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন্দর উপজেলা ছত্রলীগ নেতা খান মাসুদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছে বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদ হোসেন এ বিষয়ে জিডি (নম্বর-৪০৪) করেন। 

জিডিতে খান মাসুদ ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে সরকার তথা বিআইডব্লিউটিএ’র চলমান উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরও অভিযোগ আনা হয়। জিডিতে হুমকির ঘটনাকে নদীর গতিধারা বা প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকল্পে নদীর সীমানা পিলারের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে, গাইডওয়াল ও বনায়নের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং আদালতের নির্দেশনা অবমাননার শামিল বলে উল্লেখ করা হয়।

জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর-৩৫০৩/২০০৯ এর নির্দেশনা অনুযায়ী শীতলক্ষ্যা নদীর তীরভূমিতে সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নদীর সীমানা পিলার স্থাপন, তীর রক্ষায় ওয়াকওয়ে এবং জেটিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ দ্বিতীয় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর ও ৪ সেপ্টেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীর উভয়তীরে আকিজ সিমেন্ট থেকে বসুন্ধরা সিমেন্ট পর্যন্ত নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উচ্ছেদ কার্যক্রমে ৪ সেপ্টেম্বর বন্দর ১ নম্বর খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীর জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন অবকাঠামো উচ্ছেদ করা হয়। উক্ত উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বন্দর থানা ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদের নেতৃত্বে গত ৬ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গালাগালসহ হুমকি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদীর সীমানা চিহ্নিতকরণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণ রোধে হাইকোর্টের রিট পিটিশন নম্বর- ৩৫০৩/২০০৯ এর নির্দেশনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠে খান মাসুদ বাহিনী। দখলে নেয় শীতলক্ষ্যা নদী তীর সংলগ্ন বন্দর সেন্ট্রাল খেয়া ঘাট এলাকার বিভিন্ন স্ট্যান্ড। বন্দর সেন্ট্রাল ঘাট এলাকার বিভিন্ন টেম্পু, বেবিট্যাক্সি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বন্দর স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ক্যাবল ব্যবসা দখলেও নাম উঠে আসে খান মাসুদের। বেশ কয়েকবার অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছেন খান মাসুদ।