শরীয়তপুরের পানিবন্দি ৬০ প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ ফেরাতে সময় লাগবে

শরীয়তপুরের চার উপজেলার পানিবন্দি ৬০ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। পানিবন্দি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানের পরিবেশ ফেরাতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলা সদরের চারটি, জাজিরা ১৯টি, নড়িয়া ২৮টি ও ভেদরগঞ্জের চারটিসহ মোট ৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া নড়িয়া উপজেলার পূর্ব নড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরজপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এই দুটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি সিন্ধান্ত অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ওই সব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। তবে আশার খবর হলো গত দুই-তিনদিন ধরে জোয়ারের পানি কমতে শুরু করেছে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পানি নেমে যায় তাহলে ওই প্রাথমিক স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এমারত হোসেন মিয়া বলেন, জেলার জাজিরা একটি ও নড়িয়া উপজেলার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আশা করা যায়, ১২ তারিখের মধ্যে পানি কমে যাবে। স্কুলগুলোকে প্রস্তুত করে পাঠদানের জন্য খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জাজিরা, নড়িয়া ভেদরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দি অবস্থায় রয়েচে। ভেদরগঞ্জ কাঁচিকাটা ইউনিয়নের মাথাভাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও আশপাশে সব দিকে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নবনির্মিত ভবন।

ভেদরগঞ্জ কাঁচিকাটা মাথাভাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাছিম ইকবাল জানান, স্কুলের চারদিকে পানি। পানি না কমলে ক্লাস করানো সম্ভব হবে না। বিদ্যালয়টি ভাঙন ঝুঁকিতেও রয়েছে।

পানিবন্দি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাননড়িয়ার ঈশ্বরকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, স্কুলমাঠে পানি জমেছিল। এখন পানি কমে যাচ্ছে।

জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাস্টার রফিকুল ইসলাম জানান, কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জোয়ারের পানি উঠেছে। পানি না কমলে শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে না।

একই উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান সরদার বলেন, ইউনিয়নের পূর্ব কাজী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমেছে। পানি না কমলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাটা কঠিন হয়ে যাবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছিল, এখন নেমে যাচ্ছে। পানি কমতে থাকলে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলে ক্লাস করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। এছাড়া আমি কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছি। স্কুল খোলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যেসব বিদ্যালয় বন্যাকবলিত, সেসব বিদ্যালয় খুলে দিয়ে শ্রেণি পাঠদান করার প্রয়োজন নেই। তারা পরে শ্রেণি পাঠদান শুরু করবে। অনেক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’