৪ শিশুকে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে মামলা

ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরগামী ইমাম হাসান-৫ লঞ্চ থেকে মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে চার শিশুকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে লঞ্চটির অজ্ঞাত স্টাফদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে।

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন মুক্তারপুর নৌ-পুলিশ স্টেশনের পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) রাজীব খান বলেন, ‘লঞ্চের অজ্ঞাত স্টাফদের এ মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করবে মুক্তারপুর নৌ-পুলিশ স্টেশন।’

এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া দুই শিশু হলো- মেহেদুল হাসান (১৩), সাকিব হাসান (১৩)। ঘাটে পাওয়া অপর দুই শিশু হলো- তারিকুল ইসলাম(১০), সিয়াম (১৩)।

এর মধ্যে সাকিব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার আবুল কাশেমের ছেলে, মেহেদুল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার চাঁনপুর গ্রামের মো. শরীফের ছেলে, সিয়াম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার খামার বদুয়া গ্রামের ইমাম হোসেনের ছেলে এবং কুমিল্লার মুন্সীরহাট গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে তরিকুল। তারা ঢাকার সদরঘাট এলাকায় থাকে। লঞ্চে পানি বিক্রি ও বোতল সংগ্রহের কাজে জড়িত।

উল্লেখ্য, শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সীমানাধীন মেঘনা নদীতে শিশুদেরকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে একটি স্পিডবোটে মেঘনা নদীতে অবস্থানকালে দুই শিশুকে ভাসতে দেখে এগিয়ে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে যাই। তাদেরকে লঞ্চঘাটে আনা হলে আরও দুই শিশুকে টার্মিনালে পাওয়া যায়। এরা উদ্ধার দুই শিশুর সঙ্গে লঞ্চে ছিল। তারা অন্য নৌযানের সহায়তায় ঘাটে আসে। ভাড়ার টাকা না থাকায় লঞ্চের স্টাফরা তাদেরকে মাঝ নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ শিশুদের। এরপর ঢাকা-সদরঘাটগামী এমভি আল-বোরাক লঞ্চে তাদের তুলে দেওয়া হয়।’

এদিকে, অভিযুক্ত লঞ্চের স্টাফরা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের মাস্টার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিশুরা স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দিলে যাত্রীরা আমাদেরকে অবগত করেন। কিন্তু কতজন ঝাঁপ দিয়েছে তা জানি না। বড় বড় লঞ্চগুলো যখন ঘাটগুলোর সামনে দিয়ে যায় তখন স্থানীয় ট্রলারগুলো লঞ্চের গায়ে ভিড়ে। এ সময় যাত্রীরা ওঠানামা করেন। মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই শিশু ট্রলার দেখতে না পেয়ে কিছুদূর সামনে যাওয়ার পর ঝাঁপ দেয়। তারা ভেবেছিল ট্রলার এসে তাদেরকে নিয়ে যাবে। এ লঞ্চ মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নোঙর করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে ফেলে দেওয়া হয়নি। এছাড়া এসব শিশু পানি বিক্রেতার কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয় না। লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫০ ফুট দূরত্ব দিয়ে যাচ্ছিল লঞ্চটি।’ তারা সাঁতরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল বলে দাবি তার।