লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল

নারায়ণগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে মহাষ্টমী স্নানোৎসব শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন লাখ লাখ পুণ্যার্থী। শনিবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পুণ্যার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।

জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯টা ১১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে স্নানলগ্ন শুরু হয়। লগ্ন শেষ হবে শনিবার রাত ১১টা ৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে। এ সময়ের মধ্যে লাঙ্গলবন্দের ১৮টি ঘাটে তীর্থযাত্রীরা স্নানপর্ব সারবেন। এই উৎসবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশ নিয়েছেন। ফল-ফুলসহ ধান-দূর্বা নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নান করতে ব্রহ্মপুত্র নদে নামছেন।

কুমিল্লা থেকে স্নানে আসেন মধ্য বয়সী পপি সরকার। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে করোনার কারণে স্নানে আসতে পারিনি। এবার স্নান করলাম। পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল কামনা করেছি।’

ডেমরা থেকে আসা শিপ্রা বর্মণ বলেন, ‘প্রতিবছর পুণ্যলাভের আশায় লাঙ্গলবন্দে আসি। এবারও সে উদ্দেশ্যেই এসেছি।’

বিভিন্ন জেলা থেকে স্নানোৎসবে অংশ নিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নদের তীরে বসেছে মেলা। মেলায় ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি, মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র ও খেলনা বিক্রি হচ্ছে। মন্দিরগুলোতে চলছে ভক্তিমূলক গান। সেবাশ্রমগুলো থেকে বিতরণ করা হচ্ছে খিচুড়িসহ বিভিন্ন খাবার। অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দ এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

লাঙ্গলবন্দ স্নান উদ‌যাপন পরিষদের সভাপতি ষড়জ কুমার সাহা বলেন, করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকা এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এবার ভক্ত সমাগম বেশি হয়েছে। এ বছর প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পুণ্যার্থীদের জন্য ৪০টি সেবাক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্টরা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে স্নানোৎসব সমাপ্ত হবে।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম বলেন, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নৌ-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, কোস্টগার্ড কাজ করছে। কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।

তিনি আরও বলেন, একদিনের উৎসবে পাঁচ থেকে সাত লাখ লোক সমাগমের ফলে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি ভালো আছে।