রাজৈরে ‘কুম্ভমেলা’ শুরু

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীতে তিন দিনব্যাপী কুম্ভমেলা শুরু হয়েছে।

শনিবার (২৮ মে) সকাল থেকে শ্রী শ্রী মহামানব গনেশ পাগলের এই মেলায় আসছেন ভক্তরা। ইতোমধ্যে ভক্ত ও দোকানিরা মেলায় আসতে শুরু করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানের লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে কুম্ভমেলায়।

স্থানীয় ও মেলা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সত্য যুগে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনে যে অমৃত উঠেছিল, তা চারটি কুম্ভ পাত্রে হরিদ্বার, প্রয়াগ, উজ্জয়িনী ও নাসিক নামে চারটি স্থানে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে মুনি ঋষিরা কুম্ভমেলার আয়োজন করে আসছেন। ১৪০ বছর আগে জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখে ১৩ জন সাধু ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় ভারতের কুম্ভমেলাকে অনুসরণ করে মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে গনেশ পাগল সেবাশ্রমে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে এই মেলায়।

ভক্ত ও দোকানিরা মেলায় আসতে শুরু করেছেন

মেলা উপলক্ষে সকাল থেকেই দলে দলে ঢোল, ডংকাসহ নানা রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জয় হরিবল ও জয়বাবা গনেশ পাগল ধ্বনি উচ্চারণ করতে করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু-সন্যাসী ও ভক্তরা বাস, ট্রাক, ট্রলার ও পদব্রজে মেলা প্রাঙ্গণে আসছেন। এছাড়া ভারত, নেপাল ও অন্যান্য রাষ্ট্র থেকেও বহু ভক্ত আসেন ঐতিহ্যবাহী এ মেলায়। 

সেবাশ্রমটি ঘিরে প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে নানা রকমের দোকান। পুরো মেলা সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করছে কর্তৃপক্ষ। মেলার হাজারও দোকানে পছন্দের জিনিস সুলভ মূল্যে কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। বেচাকেনা ভালো হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও। মেলা সোমবার শেষ হলেও বেচাকেনা চলবে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত।

মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার কারণে মেলাটি বন্ধ ছিল। এ বছর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় মেলার আয়োজন করা হয়েছে।’

সেবাশ্রমের সেবাইত নবীন গোসাই বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এ বছরও পাগলের সব ভক্তদের জন্য প্রসাদের (খিচুড়ি) ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মেলাকে ঘিরে যেন কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ১২০ জনের বেশি অফিসার ও ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।’