কেন মেহেদীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে?

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দেওভোগ এলাকায় মেহেদী হাসান (২২) নামে এক পোশাক শ্রমিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ৩১ জুলাই (রবিবার) নিহতের বোন মৌসুমি বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর আগে শনিবার (৩০ জুলাই) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার দেওভোগ মিয়াপাড়া এলাকায় মেহেদী হাসান (২২) নামে এক পোশাক শ্রমিককে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- ওমর (২৭), সবুজ (৩০), রাসেল (২১), মাইকেল (২১), সীমান্ত (২২), শান্ত (২১), জুব্বা (২৩), সঞ্চয় (২১)।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, মেহেদী হাসান (২১) সদর থানাধীন পশ্চিম দেওভোগ মাদ্রাসার মিয়াপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করতেন। ৩০ জুলাই রাতে কারখানার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেওভোগ মাদ্রাসার মিয়াপাড়া এলাকার রাকিব এর চায়ের দোকানের সামনে পৌছলে রাত সাড়ে ১০টায়  পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধের জের ধরে বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জন মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কৌশলে তাকে ডেকে মৃত রজব হাজীর মাঠের গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে মেহেদীকে এলোপাথারী মারধর করে এবং ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে তার বুকের ডান পাশে ছোট বড় ১৪টি গভীর ক্ষত করে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাকে মৃত ভেবে আসামিরা চলে যায়। এ সময় তার চিৎকার শুনে ও লোক মারফত জানতে পেরে তার ছোট বোন ফারজানা আক্তার ইতি সেখানে ছুটে যায় এবং ছোরা-চাকুসহ বিবাদীদের কয়েকজনকে পালিয়ে যেতে দেখে। পরে মেহেদীকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মূলত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেহেদী হাসানকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে।

নিহতের স্বজনরা বলছেন, ‘স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেহেদীকে হত্যা করা হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ইমন হত্যা মামলার ১৬ নম্বর আসামি ছিল এই মেহেদী। রাতে সুযোগ পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে হত্যা করে। মূলত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় আট জন অংশগ্রহণ করেছে। তবে আরও কেউ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র বলছে, ‘এক বছর আগে ইমন নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার সাথে এই হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র রয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৭ জুলাই ডেবিড গ্রুপ ও ওমর ফারুক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ইমন নিহত হয়। সেসময় ইমনের ভাই ওমর ফারুক নিজেও আহত হয়। সেই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিল নিহত মেহেদী হাসান। মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদনেও নিহত মেহেদী হাসানের নাম রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ইমন হত্যার প্রতিশোধ নিতেই মেহেদীকে হত্যা করা হয়েছে।