‘দেশকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছিল বিএনপি, ভুলে যায়নি মানুষ’

বিএনপি-জামায়াতের আমলে দেশের মানুষ শান্তিতে ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত আবারও ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আপনারা ভুলে যাবেন না ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাদের সরকারের আমলে বাংলাদেশকে একটি সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করা হয়েছিল। তারা একের পর এক সিরিজ বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তাদের সময়ে আব্দুর রহমান ও বাংলাভাইর উদ্ভব হয়।  তখন দেশে স্লোগান হতো ‘আমরা সবাই তালেবান বাংলা হবে আফগান’। এই কথাগুলো আপনারা ভুলে যাবেন না। তাদের মিষ্টি কথায় আপনারা ভুলবেন না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টায় যশোর শহরের রেলস্টেশন বাজারে জাতীয় শোক দিবসের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আলোচনা সভা ও খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সংকট মোকাবিলা করে কেবল শেখ হাসিনাই দেশকে এগিয়ে নিতে পারেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। আপনারা কষ্টে আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটা বোঝেন। তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। এগুলোর মাধ্যমে আমরা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবো। আপনারা শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখবেন। তিনিই পারেন বাংলাদেশের সব সমস্যা মোকাবিলা করতে।’

নাবিল আহমেদ বলেন, ‘যোগ্য নেতার যোগ্য সন্তান হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ যত সংগঠনের নেতা আছি সবার দায়িত্ব হলো আগামী নির্বাচনে যশোরের ছয়টি আসনে নৌকার সব প্রার্থীকে জয়যুক্ত করা। অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশের দায়িত্বে আবারও শেখ হাসিনাকে আনতে হবে। আপনারা দেখেছেন, গত দুই বছর প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বে আমরা কোভিড মোকাবিলা করেছি। কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম।’

এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপস করেননি বলেই তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ফিরিয়ে দেন। এরপর তিনি স্বাধীনতার ডাক দেন। তার ডাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ৩০ লাখ প্রাণ ও দুই লাখ ৩০ হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজ পতাকা ও স্বাধীন দেশ পাই। স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে পুনর্গঠন করছিলেন তখন যারা দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারা ও তাদের বিদেশি প্রভুরা মিলে চক্রান্ত শুরু করে। তারা একের পর এক কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু যখন সবকিছু মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড় করাচ্ছিলেন, তখন ৭৫ সালে তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তাকে হত্যা করা হয়।’

নাবিল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজ করা শুরু করেন। একের পর এক বিভিন্ন সূচকে আমরা এগিয়ে যেতে থাকি। বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন নারীর ক্ষমতায়নে। নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি তিনি কাজ করেছেন। বিভিন্ন পদে বসিয়েছেন। নারী শিক্ষা, নারী স্বাস্থ্য ও সেবা, শিশুমৃত্যু রোধে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে আছি। সব কাজে নারীদের যুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী সবসময় গুরুত্বারোপ করেন। যশোরের নারীরাও সৃজনশীল নানা কাজে যুক্ত আছেন। নারী নেত্রীদের কাজ হলো সব নারীকে বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করা।’

যশোর শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেবুব রহমান ম্যানসেলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন ও যশোর পৌর মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ।

উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান মিন্টু, কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, ফারুক আহমেদ, কচি কামাল হোসেন, মুন্সি মহিউদ্দীন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, পৌর কাউন্সিলর শাহেদ হোসেন নয়ন প্রমুখ।