ঘন কুয়াশায় আলো জ্বেলে চলছে যান

আজ ১৩ কার্তিক। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী হেমন্তকাল চলছে। পৌষ আসার বাকি প্রায় দেড় মাস। কিন্তু প্রকৃতি এখনই শীতের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। ভোর থেকে নামছে কুয়াশা। মধ্যরাত থেকে অনুভূত হচ্ছে শীত। দুর্ঘটনা এড়াতে সকালেও সড়কে আলো জ্বেলে চলছে যানবাহন।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাশকান্দি, উমেদপুর পাচ্চর এলাকা, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের বাসস্ট্যান্ডসহ পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গাছের ডগা, কলাপাতা, সিম ও ধানের শীষে শিশির জমে আছে। টলটলে মুক্তদানার মতো শিশির জমতে শুরু করেছে সবুজ ঘাসের ডগায়। ধানক্ষেত ডিঙিয়ে পূর্ব দিগন্ত রাঙিয়ে উঠেছে সূর্য। তবে ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে আলো জ্বেলে চলছে যানবাহন।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন ধরেই জেলায় শীতের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ভোরে ঘন কুয়াশা পড়ছে। সবুজ ঘাস, ধান ও চা গাছের ডগায় শিশির বিন্দুর দেখা মিলছে। জেলাজুড়ে গভীর রাতে বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ রেখে শরীরে হালকা কাঁথা ও কম্বল জড়াতে হচ্ছে। রাত পেরিয়ে যখন ভোরের আগমন ঘটে তখন ঘন কুয়াশার দেখা মিলছে কোথাও।

ভোর থেকে নামছে কুয়াশা

শীত নিবারণের প্রস্তুতি হিসেবে অনেকে লেপ-তোষক তৈরি শুরু করে দিয়েছেন। অনেকে পুরাতন লেপ-তোষক খুলে নতুন করে তৈরি করে নিচ্ছেন। বর্তমানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপ তৈরির কারিগররা।

শিবচরের বাজারের কয়েকজন লেপ-তোষকের কারিগরের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি করে লেপ সেলাই করছেন তারা।

বাজারের যাদুয়ারচর রোডের তুলা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‌‘তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার লেপের দামও অনেক বেড়েছে। উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগেভাগেই লেপ সেলাই করছেন। কেউবা আবার পুরনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন।’

দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে আলো জ্বেলে চলছে যানবাহন

বাহাদুর পুর বাজারের লেপ-তোষক বিক্রেতা জহিরুল বলেন, ‘গত কয়েক দিন দরে শীত বাড়ায় অনেকেই লেপ-তোষক অর্ডার করছেন। আমাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।’

শিবচর উপজেলা পরিষদ চত্বরে হাঁটতে বের হওয়া ফারুক মিয়া নামে এক ইউপি সদস্য বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরেই সকালে শীত পড়ছে। আজ শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীতের কাপড় গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বেরিয়েছি।’

ভোরে ঘন কুয়াশা থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে

পাচ্চর বাসস্টান্ডে গাড়ির অপেক্ষায় ঢাকাগামী যাত্রী মনির মোল্লা বলেন, ‘সকালে বাড়ি থেকে ভ্যানে এখানে এসেছি। এত কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে পৌষ মাস শুরু হয়ে গেছে।’

শহরের উতরাইল এলাকার শিক্ষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি নিয়মিত ভোরে আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে হাঁটাহাঁটি করি। আজ কুয়াশার কারণে দেরিতে হাঁটতে বের হয়েছি।’

কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে পৌষ মাস শুরু হয়ে গেছে

মাদারীপুর থেকে ছেড়ে আসা সার্বিক পরিবহনের চালক রোমান মিয়া বলেন, ‘ভোর ৬টা ২০ মিনিটে মাদারীপুর থেকে গাড়ি ছেড়েছি। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত মোটামুটি কুয়াশা ছিল। এক্সপ্রেসওয়েতে আসার পরে কুয়াশা কমতে শুরু করেছে।’

মাদারীপুর আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুর রহিম সান্টু বলেন, ‘ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে মাদারীপুরে আগাম শীত পড়ছে। ভোরে ঘন কুয়াশা থাকায় শীত অনুভূত হচ্ছে। যে কারণে এটাকে শীতের আগাম পূর্বাভাস বলা চলে। পরবর্তী সময়ে শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যেতে পারে।’