প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণা করতো তারা

ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দুই প্রতারক হলেন- চন্দ্র শেখর মিত্র (৫৪) ও লিয়াকত হোসেন (৫১)।

তাদের একজনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছটি থানার কুলকাঠি এলাকায় ও অপরজনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার কুমারিয়াজোলায়। তারা দুজনই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি দফতরের অফিসারকে ফোন দিয়ে ও প্রভাবিত করে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান ওই দুই প্রতারককে গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, তাদের দুজনকে পৃথক স্থান থেকে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) পৃথক সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, ফরিদপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ড্রাইভার, পরিছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী নিয়োগের জন্য গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জেলার আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানও দরপত্র জমা দেয়।

তিনি জানান, পরে চন্দ্র শেখর মিত্র নামের এক প্রতারক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি একাধিকবার ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তফা ফারুকের ব্যক্তিগত নম্বরে কল করে উক্ত ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে এই আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন এবং কৌশলে নানা ধরনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, একপর্যায়ে আসামি চন্দ্র শেখর মিত্র ফরিদপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে এসে নিজেকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর চিফ প্রটোকল অফিসার পরিচয় দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজটি ট্রাস্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে দেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে চন্দ্র শেখর মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে সে স্বীকার করেন প্রতারণার কথা। তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে সারা দেশে এভাবে প্রতারণা করে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শেখ মো. আবদুল্লাহ বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া, ভাঙ্গা থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম, ডিবির ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশীদসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।