চুরির অভিযোগে তিন শিশুকে মারধর, চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চুরির অভিযোগে তিন শিশুকে মারধর ও দুজনের শিশুর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রদী বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। 

গোপালদী পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হালিম সিকদারের পাওয়ার লুমের মেশিনের যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ।

অভিভাবকরা জানান, সোমবার সকালে মক্তব শেষে ১১ ও ৮ বছর বয়সী দুই শিশু মেয়র হালিমের ভেঙে ফেলা পাওয়ার লুম কারখানার কাছে ক্রিকেট খেলতে যায়। এ সময় আট বছর বয়সী শিশুটি একটি লোহার শিকল কুড়িয়ে এনে ১১ বছর বয়সী শিশুর কাছে তা রাখতে দেয়। বিষয়টি হালিম দেখতে পেয়ে তাদের আটক করেন। পরে দুই শিশুর হাত বেঁধে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের কথার সূত্র ধরে সাত বছর বয়সী আরেক শিশুকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন। পরে অভিভাবকদের অনুরোধে একজনকে ছেড়ে দেন। অন্য দুজনকে মারধর করেন। 

তিন শিশুর মধ্যে ১১ বছর বয়সী শিশুটির বাবা উপজেলার একটি মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘তিন জনই শিশু। তারা অন্যায় করলে অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে বিচার করতে পারতেন। কিন্তু তিনি আমার ছেলেসহ তিন জনকে চুরির অভিযোগে মারধর করেছেন। এই ঘটনায় ছেলেটা খুব ভয় পেয়েছে।’

এ ঘটনায় অপর দুই ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে মেয়র হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওরা সবাই কিশোর, কেউ শিশু না। ওরা পাওয়ার লুমের মেশিনের যন্ত্রাংশ চুরি করেছে। সকালে পাওয়ার লুমের মেশিনের পাশে ওদের দেখি। পরে ওদের পকেটে মেশিনের যন্ত্রাংশ পেয়েছি। এজন্য ওদের দুজনকে প্রথমে আটক করি। ওদের কথা অনুযায়ী আরেকজনকে ধরা হয়। তবে অভিভাবকের অনুরোধে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওরা এর আগেও বিভিন্ন সময় চুরি করেছে। আমার প্রায় ১৮ থেকে ১৯ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি চুরি গেছে।’

চুল কেটে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চুরির ঘটনায় ওদের আটক করেছি তবে আমি চুল কাটিনি। ওদের আটক করার পর আমি সেলুনে দাড়ি ছাঁটাই করতে যাই। এ সময় কে বা কারা ওদের দুজনের চুল কেটে দিয়েছে আমি জানি না। ওদের মারধরও করা হয়নি। আর চুরির ঘটনার ওদের একজনের বাবা এসে কোমড়ে দড়ি দিয়ে বেঁধেছে। আমি কিছু করিনি। প্রয়োজনে আপনারা এসে তদন্ত করেন।’

আড়াইহাজার থানার ওসি আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ চুরি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে, কেউ চুল কেটে দিতে পারে না।’