ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার যানজট

নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার অংশ জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৯ মার্চ) সকালে মহাসড়কের মদনপুরের আগে থেকে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত সড়কজুড়ে যানজট রয়েছে। এতে যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

এদিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশেও ঢাকামুখী লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকে সমাসড়কসহ আশপাশের এলাকার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের তীব্রতায় বিরক্ত হয়ে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিচ্ছেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী লেনে তীব্র যানজট রয়েছে। আর মদনপুর থেকে সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লেনে কোথাও যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে আবার কোথাও ফাঁকা রয়েছে।

তীব্র যানজটের ফলে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আবু জাফর মিয়া। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে মহাসড়কে তীব্র যানজট রয়েছে। মদনপুর এলাকা থেকে বাসে করে মেঘনা ব্রিজ পার হতে চেয়েছি। সেখানে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করি। কিন্তু তীব্র যানজটের ফলে এক ঘণ্টায় আধা কিলোমিটার এগোতে পারিনি। এ কারণে বাস ছেড়ে পায়ে হেঁটে রওনা করেছি। সামনে যানজট কম দেখলে অন্য কোনো যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছাবো। নয়তো পায়ে হেঁটে পুরো পথ পাড়ি দিতে হবে।’

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট

সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে গরমের মধ্যে পত্রিকা হাতে বাতাস করছেন জামাল মিয়া। তিনি বলেন, ‘যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে একই জায়গায় বসে আছি। কর্মস্থলে যেতে হলে মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।’

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল নিয়ে কুমিল্লা জেলায় ট্রাক চালিয়ে যাচ্ছেন চালক রাশেদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে যানজটের মধ্যে গাড়ি বন্ধ করে বসে আছি। মাঝে মধ্যে সামনের গাড়ি কিছুটা এগোলে গাড়ি স্টার্ট দিই। এভাবে সকাল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে কাঁচপুর এলাকায় বসে আছি। কখন যানজট শেষ হবে কে জানে।’

লাঙ্গলবন্দ স্নানে যাওয়া সৌরভ সরকার বলেন, ‘গজারিয়া ভবেরচর থেকে বাসা থেকে বের হযেছি সকাল ৬টার দিকে। যানজটের কারণে এখানে পৌঁছেছি ১০টার দিকে। তাও আবার সোনারগাঁও থেকে হেঁটে আসতে হয়েছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবুল কাশেম আজাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মদনপুর থেকে কাঁচপুর হয়ে মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট রয়েছে। বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানোৎসবকে ঘিরে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছেন। মূলত সে কারণে গতকাল রাত থেকে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত টিম কাজ করছে। এই উৎসব শেষ হলে যানজট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে।’

গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এ.এস.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী স্নানের কারণে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। যানবাহনের অব্যাহত চাপে প্রথমে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশে সৃষ্টি হয় যানজট। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে গজারিয়া অংশে যানজট চলে আসে যা পরে দাউদকান্দির টোল প্লাজা পেরিয়ে দাউদকান্দি মোহন সিএনজি পাম্পের সামনে পর্যন্ত পৌঁছে যায়। প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’