স্কুলশিক্ষককে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, পুলিশের কাছে বর্ণনা দিলো ৫ আসামি

রাজবাড়ীর পাংশায় স্কুলশিক্ষক ও ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে (৪৭) গুলি করে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যায় জড়িত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। শুক্রবার (৫ মে) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের হাটবনগ্রামের কলম শেখের ছেলে শাকিবুল হাসান (১৬), আনন্দ সরকারের ছেলে আকাশ সরকার (১৯), ইন্দ্রজিৎ সরকারের ছেলে রামপ্রাসাদ সরকার, অজিৎ সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৮) ও অরবিন্দ সরকারের ছেলে বাদল সরকার (১৮)। তাদের কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক, দুই পিস কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

নিহত মিজানুর রহমান পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের বশাকুষ্টিয়া গ্রামের ইব্রাহিম মন্ডলের ছেলে। তিনি পাংশা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থাগারিক ও তথ্য বিজ্ঞান) ছিলেন। এ ছাড়াও এলাকার বাজারে সারের ব্যবসা করতেন। রবিবার (৩০ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তার সারের দোকানের হালখাতা শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার তার স্ত্রী শাহানারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামি করে পাংশা মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে এবং হত্যার পাঁচ ও মামলার তিন দিনের মাথায় রহস্য উদ্ঘাটন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান জানান, ৩০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তার সারের দোকানের হালখাতা শেষ করে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে বলাই বিশ্বাসের বাড়ির সামনে রাস্তা ভাঙা থাকায় মোটরসাইকেলের গতি কমলে আগে থেকেই ওতপেতে থাকা ৮/১০ ছিনতাইকারী তার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে গতিরোধ করে। পরে ছিনতাইকারীরা তার কাছে টাকা না পেয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে মিজানুরের মাথায় গুলি করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এসপি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামিরা মূলত হালখাতার টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দ্রুত  মামলাটির তদন্ত নিষ্পত্তি করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) রেজাউল করিম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, ডিআইও-১ মো.সাইদুর রহমান, পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।