টাকার জন্য নারীকে পিটিয়ে হত্যা, আ.লীগ নেতা গ্রেফতার

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে দাদনের টাকার জন্য বিলকিস বেগম (৪০) নামে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামি মো. নুর আলমকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে র‍্যাব কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এম এম সবুজ রানা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রবিবার (১৩ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে করিমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নুর আলম কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা গুনধর ইউনিয়নের ইন্দাচুল্লি গ্রামের মৃত মশ্রব আলীর ছেলে। তিনি গুনধর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানিয়েছে, করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুর আলম গত ৬ আগস্ট দুপুরে দাদনের টাকার জন্য প্রকাশ্যে রাস্তায় বিলকিস বেগম নামের এক ইটভাটা শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেন। বিষয়টি প্রচার হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে এ ঘটনায় নিহত নিহতের ছেলে মাসুম বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এতে উল্লেখ করা হয়, মামলার পর ১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি সুজন মিয়াকে (৩৫) পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে ২ নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা নুর আলম গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যান। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  

প্রসঙ্গত, বিলকিস ও তার পরিবারের সবাই চট্টগ্রামে ইটভাটায় কাজ করতেন। বর্ষাকালে ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারটি সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আসে। নুরে আলম ও তার ভাই সুজন মিয়া বিভিন্ন ইটভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করেন। বিলকিস বেগমের স্বামী আব্দুল করিম গত বছর সুজনের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা দাদন নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা তিনি পরিশোধও করেন। বাকি ৬০ হাজার টাকা তারা পরিশোধ করতে পারছিলেন না।

এই টাকার জন্য গত ৬ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে নূরে আলম ওই নারীর বাড়িতে যান। তখন বিলকিসের স্বামী আব্দুল করিম বাড়ি ছিলেন না। পাওনা টাকা নিয়ে বিলকিসের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় নুরে আলমের। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বাড়ির সামনের পাকা রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করেন। নুর আলম প্রভাবশালী হওয়ায় ওই নারী‌কে রক্ষা করতে কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেননি।