কর্মীকে চড় মেরে সমালোচিত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সভাপতি

মিছিলের মধ্যে উত্তেজিত হয়ে প্রকাশ্যে এক কর্মীকে চড় মেরেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। সম্প্রতি এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে চারদিকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলের সামনে থাকা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন হঠাৎ পেছনে তেড়ে গিয়ে সালাহউদ্দিন নামে একজন কর্মীর গালে থাপ্পড় দেন এবং বুকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেন। এ সময় গিয়াসউদ্দিন আরও একজন বয়স্ক লোককে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের দুই হাতের বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে দেখান তিনি।

সালাউদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বলে জানা গেছে। এ ঘটনা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকার মতিঝিলের নটরডেম কলেজের সামনে জড়ো হন। নির্ধারিত সময়ে মিছিলটি শুরু হয়ে মহাসমাবেশের দিকে অগ্রসর হলে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী মিছিলের সামনে চলে আসেন এবং কয়েকজন ব্যানারের সামনে ছবি ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তাদেরকে বারবার ব্যানারের পেছনে যেতে বলার পরও গ্রাহ্য না করায় জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন মিছিল থেকে বেরিয়ে সামনে গিয়ে এই ঘটনা ঘটান। এ সময় তার পাশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিবসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হ্যাঁ, এমন ঘটনা ঘটেছে। সমাবেশে লোকজন অনেক বেশি হয়েছে। অনেকে সেলফি তোলার জন্য ব্যানারের সামনের দিকে চলে এসেছিল। এতে করে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে তিনি ওই কর্মীকে থাপ্পড় দিয়েছেন। তা ছাড়া ওই কর্মী তার অনেক কাছের লোক।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেলার সভাপতি হিসেবে ওনার এই কাজটা করা ঠিক হয় নাই। আসলে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন। তা ছাড়া বড় দলের কর্মসূচিতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে থাকে। তবে এটা তেমন বড় কিছু হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, ‘দলের যত বড় পদধারী নেতা হোক না কেন, কর্মীর গায়ে হাত তোলা একেবারে অনুচিত। এটা কোনও নেতা করতে পারে না।’