নিপাহ ভাইরাসে বছরের প্রথম মৃত্যু, কাঁচা রসে আক্রান্ত হয়েছিলেন যুবক

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার আগে খেজুরের কাঁচা রস পান করেছিলেন। রস থেকে এই সংক্রমণ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মারা যাওয়া যুবকের নাম বাবুল হোসেন (৩০)। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বাবুল সদর উপজেলার পুটাইল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্তা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মাইনুদ্দিনের ছেলে। পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন।

অপরদিকে, খেজুরের কাঁচা রস পানে লুৎফর রহমান (২৭) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি একই ইউনিয়নের ঘোস্তা জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের নকুমুদ্দিনের ছেলে। তবে তার মৃত্যু নিপাহ ভাইরাসে হয়েছিল কিনা, তা নিশ্চিত করতে পারেননি চিকিৎসকরা।

জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে দুই জনের নয়, শুধুমাত্র বাবুল হোসেনের নাম রেকর্ড আছে। বাবুল নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে আমাদের জানিয়েছে  সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এটা এ বছর প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। এছাড়া আর কারও মৃত্যুর তথ্য আমাদের কাছে নেই।’

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেছেন, ‘খেজুরের কাঁচা রস পানে বাবুল নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।’

মৃতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুটাইল ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুর রহমান মহিদ জানান, ১৫ দিন আগে বাবুল খেজুরের রস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য ১৬ জানুয়ারি তাকে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ঢাকার ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মারা যান। রবিবার বেলা ১১টার দিকে নিজ গ্রামে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে, পুটাইল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মেম্বার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গত শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) লুৎফর রহমান খেজুরের রস পানে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে শুনেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘লুৎফর খেজুরের কাঁচা রস পানের পর মাথাব্যথা, জ্বর শুরু হয়। প্রথমে ঘোস্তা বাজারের স্থানীয় ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার মারা যান। এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে আমার এলাকায় খেজুরের রস খেয়ে দুই জন মারা গেলো।’