বাইপাস সড়ক নির্মাণ বন্ধের দাবি, কর্মসংস্থান নিয়ে শঙ্কায় ১০ লাখ মানুষ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বাবুরহাট ও মাধবদীকে পাশ কাটিয়ে নির্মিতব্য ৮ কিলোমিটার বাইপাস (পাঁচদোনা-পুরিন্দা) সড়কের পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর মাধবদী বাসস্ট্যান্ডে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, সাসেক প্রকল্পের অধীনে চলমান কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার সড়কের ৬ লেনের কাজ চলমান রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাবাদীদের মদতে নরসিংদীর ঐতিহ্য, ‘প্রাচ্যের মানচেস্টার’ খ্যাত শেখেরচর-বাবুরহাট ও মাধবদীকে পাশ কাটিয়ে ৮ কিলোমিটার সড়কে বাইপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি নষ্টের পাশাপাশি এই অঞ্চলের ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। মাধবদী ও বাবুরহাটে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয় উল্লেখ করে বাবুরহাট ও মাধবদীকে পাশ কাটিয়ে সড়ক নির্মিত হলে এসব লেনদেন কমে যাওয়ার পাশাপাশি ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানে ভাটা পড়বে বলে দাবি মানববন্ধনকারীদের।

মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আমরা মাধবদীবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু। এ সময় তিনি বলেন, ‘এই মাধবদী এবং বাবুরহাটের লেনদেনকে ঘিরে প্রায় অর্ধশত ব্যাংকের শাখা রয়েছে। প্রায় দশ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এই এলাকায়, এ ছাড়া প্রতিসপ্তাহে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। মাধবদী ও বাবুরহাটকে পাশ কাটিয়ে সড়ক নির্মাণ হলে বিপুল পরিমাণ মানুষ কর্ম হারাবে। এ ছাড়া সকল প্রকার ব্যবসায়ে লেনদেন অনেকটা কমে যাবে। মাধবদী এবং বাবুরহাটের যে ঐতিহ্য সেটি ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। যার ফলশ্রুতিতে বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে মাধবদী ও বাবুরহাটকে পাশ কাটিয়ে এই বাইপাস সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এই মুহূর্তে আমরা তা কোনোভাবেই মানতে পারছি না। সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের রক্ষার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি।’

সালেক চৌধুরী নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘স্বৈরাচারের আমলে সুবিধাভোগী কিছু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি তাদের ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে তৎকালীন সরকারকে টাকা দিয়ে বাবুরহাট এবং মাধবদীকে বাদ দিয়ে পাঁচদোনা মোড় থেকে বাইপাস সড়ক নির্মাণের চেষ্টা করে। আমরা তা কোনোভাবেই মানতে পারছি না। এরকম চলতে থাকলে বাবুরহাট অচিরেই ধ্বংসের পথে যাবে। এই সমস্যা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোমেন মোল্লা, নরসিংদী সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবু সালেহ চৌধুরী, শহর বিএনপির সভাপতি আমান উল্লাহ আমানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।