টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের কাছে হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার বন্ধসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে ‘নারী ও শিশু যৌন নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত দাবিগুলো জানান তারা।
এর আগে সারা দেশে চলমান নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শহীদ মিনারে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচিতে সমাজকর্মী মুঈদ হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফাতেমা রহমান বিথী, শিক্ষার্থী তাওহীদা ইসলাম স্বপ্নীল ও প্রেমা সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি এই মঞ্চ দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি, ২৫ ফেব্রুয়ারি মার্চ ফর জাস্টিস এবং সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনকারী তাওহীদা ইসলাম স্বপ্নীল ১১ দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে পুলিশ সুপার বরাবর ওই দাবিগুলোর কাগজ জমা দেন। এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তাদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
তাদের দাবিগুলো হলো- টাঙ্গাইলের জনগণের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মারুফ হত্যায় জড়িত পুলিশদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে যেসব পুলিশ গুলি চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। টাঙ্গাইলে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় জড়িতদের গ্রেফতার করে জনসম্মুখে তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন সেল গঠন করতে হবে এবং এই সেলের দায়িত্ব একজন নারী পুলিশকে দিতে হবে। টাঙ্গাইলের যেসব এলাকা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য চিহ্নিত সেসব এলাকায় পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। মাদক, চাঁদাবাজি, দখলদারী, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫ আগস্টের পর যতগুলো মামলা এজাহারভুক্ত হয়েছে, সেসব মামলার চিহ্নিত প্রকৃত দোষীদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মামলা বাণিজ্যকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। টাঙ্গাইলে যেন মব জাস্টিস না হয় বা জনগণ আইন হাতে তুলে না নেয়, সেজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
ফাতেমা রহমান বীথি বলেন, ‘আমরা টাঙ্গাইলের জনগণ নিরাপত্তা চাই। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ হবে নিরাপদ, বৈষম্যহীন, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ এবং সেটি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, প্রশাসনের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্র ব্যর্থ হলে ছাত্র-জনতা আবারও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজপথে নেমে আসবে।’