ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাত্রদল বলে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বাগবিতণ্ডা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে গ্রেফতারকৃত এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ কর্মীকে নিজেদের দলের কর্মী দাবি করে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। পরে তথ্য-প্রমাণ দেখিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। 

সোমবার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রাম থেকে ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করেন চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাকির হোসেন। গ্রেফতার ছাত্রলীগ কর্মীর নাম রাকিব সরকার বনি (৩০)। তিনি ইন্দ্রপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চকপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ।

ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কেন রাকিবকে গ্রেফতার করছেন? সে তো ছাত্রদল কর্মী। তাকে ছেড়ে দেন। তখন পুলিশ জানায়, রাকিব ছাত্রলীগ কর্মী। তার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান তারা।

শ্রীপুর ধানাধীন চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই জাকির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘রাকিব সরকারকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে ইন্দ্রপুর বাজারে পুলিশকে ঘিরে ধরেন মাওনা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি হালিম শেখ এবং স্থানীয় বিএনপির কর্মী আসলাম মিয়া। তারা জানতে চান, রাকিবের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আছে কিনা? রাকিব ২০২৩ সালে ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন এমন দাবি করে বাগবিতণ্ডায় জড়ান নেতারা। এ অবস্থায় তাদেরকে আমরা জানাই, ২০২৪ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর নির্বাচনি প্রচারণা করেছেন রাকিব। ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশ নিয়েছেন। ওসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও দেখালে শান্ত হয়ে ফিরে যান বিএনপির নেতারা। পরে রাবিককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি আমরা।’

এ বিষয়ে জানতে মাওনা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং শ্রমিক দলের সভাপতি হালিম শেখকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘রাকিব সরকার ছাত্রলীগ কর্মী। ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচার কমিটির সদস্য ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে। এরপরও কেন আমাদের দলের নেতারা তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন, তা আমার জানা নেই।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী রাকিব সরকারকে মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’