প্রতিবন্ধী ছেলেকে নদীতে ফেলে দিলেন মা

মাদারীপুরের শিবচরে প্রতিবন্ধী সন্তানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নাসির উদ্দিন নামের ১৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতুর ওপর থেকে আড়িয়াল খাঁ নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে  উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাচ্চামারা  এলাকায় আড়িয়াল খাঁ সেতুর ওপরে এ ঘটনা ঘটে। 

ফেলে দেওয়া ১৫ বছর বয়সী নাসির উদ্দিন শিবচর উপজেলার বন্দর খোলা ইউনিয়নের সিকদার হাট কাচারীকান্দি গ্রামের মৃত্যু আজগর হাওলাদারের ছেলে।

সেতুতে চলাচলকারী প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই ছয় বছরের একটি মেয়ে ও প্রতিবন্ধী একটি ছেলেকে নিয়ে  আড়িয়াল খাঁ সেতুর রেলিংয়ের উপরে বসে ছিল এক নারী। সেতুতে চলাচলকারীরা ওই মহিলাকে সাহায্য করতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হতেন। পরে সন্ধ্যার ৮টার  দিকে সেতুর ওপরে মানুষের চলাচল কিছুটা কমে এলে রেলিংয়ের ওপর থেকে প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে পানিতে ফেলে দেন।

দৃশ্যটি দেখে ফেলেন বিপরীত পাশে রেলিংয়ের উপরে থাকা স্থানীয় কিছু লোকজন । পরে তারা এগিয়ে গেলে রিজিয়া বেগম নিলিমা নামের (৪৫) বছর বয়সের ওই মহিলা অকপটে স্বীকার করে বলেন, জন্মের পর থেকেই নাসির উদ্দিন প্রতিবন্ধী। হাত পা চিকন, কথা বলতে পারে না, চোখে দেখে না, দাঁড়াতেও পারে না। এদিকে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে সংসারের বোঝা এখন তার ওপরে। জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী ছেলে আছে বাড়তি বোঝা  হিসেবে। দীর্ঘ ১৫ বছর প্রতিবন্ধী সন্তানকে লালন-পালন করলেও সন্তানটি যেন এখন তার অভাবের সংসারে একমাত্র যন্ত্রণার কারণ এমনটি মনে করেই নিজের সন্তান নদীতে ফেলে দেন তিনি।

দৃশ্যটি দেখে নুর আলম নামের এক আইসক্রিম বিক্রেতা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল ফোন করেন। পরে দত্তপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ইমরানের  নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আড়িয়াল খাঁ সেতুর ওপর থেকে একটি মেয়েসহ ওই নারীকে হেফাজতে নেয়। পরে তাকে শিবচর থানায় আনা হয়।

এ বিষয়ে শিবচর থানার ওসি রতন শেখ বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং ওই নারীকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। পানিতে ফেলে দেওয়া সন্তানটিকে উদ্ধারের জন্য, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরিরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।