কড়া নিরাপত্তায় মানিকগঞ্জ আদালতে মমতাজ

হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জের আদালতে আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় গাজীপুর জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে মমতাজ বেগমকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এ সময় মমতাজ বেগমকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আর হেলমেট পরিধান করে আনা হয়।

এর আগে, চার দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মমতাজ বেগমকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাগারে পাঠান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।

মানিকগঞ্জ কোর্টের ওসি আবুল খায়ের জানান, ২০১৩ সালে সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিলে পুলিশের গুলিতে চার জন নিহত হন। এ ঘটনায় মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে গত ২৫ অক্টোবর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মো. মজনু মোল্লা বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর তার নির্বাচনি এলাকা হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা রয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মামলাটি দায়ের করেন।

ওসি আরও জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ ও ৩-এর বিচারক মুহম্মদ আব্দুন নূর ও  আইভি আক্তারের আদালতে মমতাজ বেগমের শুনানি হবে।

মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য হয়ে ওই বছরই নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন। এরপর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর ও হরিরামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে তিনি সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। তার আত্মীয়স্বজন ও অনুসারীদের নিয়ে পরিবহনে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ–বাণিজ্য, পদ–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সংসদ সদস্য হন। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে ধরাশায়ী হন তিনি। তবে এখনও তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে আছেন। 

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মমতাজ বেগম সংসদে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অরুচিকর বক্তব্য এবং অধিবেশনে গান গেয়ে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হন।

মমতাজ বেগমের নামে মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানায় তিনটি হত্যা মামলা এবং হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে করা আরেকটি মামলার প্রধান আসামি তিনি। এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা আছে।