প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় লাগাম টানতে হবে: বদিউল আলম মজুমদার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘মৌলিক সংস্কার দরকার, তা না হলে আমাদের পণ্ডশ্রম হবে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় লাগাম টানতে হবে। যাতে করে প্রধানমন্ত্রী মোগল সম্রাটের মতো ক্ষমতাধর না হয়। এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বৈরাচার আমাদের ঘাড়ে বসতে না পারে। একজন প্রধানমন্ত্রী হন সংসদের নেতা ও আবার তিনি দলেরও নেতা।’

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় একটি কনভেনশন সেন্টারে নাগরিক সংলাপের একটি সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

স্বৈরাচারী ব্যবস্থা এখনও বহাল রয়েছে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘স্বৈরাচার বিতাড়িত হয়েছে, কিন্তু স্বৈরাচারী ব্যবস্থা এখনও বহাল রয়েছে। যেই সাংবিধানিক কাঠামো, আইন-কানুন ও প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে দানবে পরিণত করেছে, সেগুলো এখনও বিরাজমান। এগুলো পরিবর্তন না আনা হলে আবারও স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি হবে।’

নির্বাচন দ্রুত সময়ের মধ্যে হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজন আছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের পাশাপাশি কতগুলো সংস্কার দরকার আছে। নিশ্চয়ই বিগত দিনের পাতানো নির্বাচনের কথা মনে আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই জন প্রধান নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন। কারণ তারা পাতানো নির্বাচন করেছে, জালিয়াতি করেছে। এরকম নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না। ফলে নিয়োগ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। ফলে পাতানো নির্বাচন করতে সুবিধা হয়েছে। তাই কথায় কথায় দলের ও ব্যক্তি স্বার্থে কেউ যাতে সংবিধান সংস্কার বা পরিবর্তন করা না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

স্বৈরাচারের পুনঃপ্রবর্তন ঠেকানোর কথা উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘কতগুলো মৌলিক বিষয়ে একতা থাকা দরকার রাজনৈতিক দলগুলোর। সেই মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে একমত হয়ে যদি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা যায় এবং নির্বাচিত সরকার সেগুলো বাস্তবায়ন করলে ভবিষ্যতে স্বৈরাচারের পুনঃপ্রবর্তন ঠেকাতে পারবো।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুজনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, জমির উদ্দিন সরকার, রফিউর রাব্বি ও সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল সহ প্রমুখ।